দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামছে। ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করছে ইসি। তবে, মূল টিম মাঠে নামার আগে নির্বাচনের তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর অগ্রবর্তী টিমকে ভোটের মাঠে নামতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা এ সংক্রান্ত চিঠি সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে (পিএসও)পাঠানো হয়েছে।
এর আগের সেনা মোতায়েনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল অনুরোধ জানালে রাষ্ট্রপতি এতে সম্মতি দেন।
সোমবার পিএসওকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন যথাসম্ভব সব ধরনের আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।’
চিঠিতে আর বলা হয়, ‘ভোটগ্রহণের আগে, ভোটের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় দেশের ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত হবে মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
পিএসওকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগ থেকে নির্বাচনি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনি পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী টিম পাঠানো যেতে পারে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে।’
মোতায়েনকৃত সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনি কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যেভাবে সহায়তা দেবে তা তুলে ধরা হয়। তাদের সহায়তার ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে:
(ক) সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে।
(খ) রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।
(গ) সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে এবং আইন, বিধি ও পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
(ঘ) সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে।
(ঙ) ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ ও মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা অবহিত করতে হবে।
(চ) বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে চাহিদা মতো আইনানুগ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে।
সেনা মোতায়েনের বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হবে বলেও সোমবারের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।