বিশ্বকাপ ফাইনাল শুরু হতে তখন কয়েক ঘণ্টা বাকি। অস্ট্রেলিয়া অনুশীলন সেরে চলে গিয়েছে। বিকাল পৌঁনে ছ’টার একটু পরে তিনি নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের সাংবাদিক সম্মেলনের ঘরে ঢুকলেন। কমলা জার্সি পরা, মুখে স্মিত হাসি। পরের ৩৫ মিনিট কাটল ঝড়ের মতো। ১৪০ কোটি ভারতবাসীর প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়ে ভারতকে বিশ্বকাপ ফাইনালে নেতৃত্ব দিতে নামা রোহিত শর্মা কখনও হাসলেন, কখনও রেগে গেলেন, বিরক্ত হলেন, সপাটে জবাব দিলেন, আবার আবেগপ্রবণও হয়ে পড়লেন। সাংবাদিক বৈঠকের মাঝে বিভিন্ন ভাবে ধরা দিলেন ভারত অধিনায়ক।
কথাবার্তার শুরুতেই রোহিত আবেগপ্রবণ। বিশ্বকাপ ফাইনালে দেশকে নেতৃত্ব দিতে নামার আবেগ তখন তাঁর গলায়। জানালেন, কী ভাবে এই দিনটার স্বপ্ন দেখে এসেছেন। দলের সবাই কী ভাবে বিশ্বকাপ তোলার জন্যে মরিয়া হয়ে রয়েছে। ট্রফি না জিতে তাঁরা থামতে চান না।
মিনিটখানেক পরেই রোহিত বিরক্ত। ঘরের ভেতরে কারও মোবাইল বেজে উঠেছিল। ভ্রূ কুঁচকে কড়া গলায় বললেন, “ক্যয়া ইয়ার, ফোন বন্ধ রাখো না ইয়ার’’ (কী ভাই, ফোনটা একটু বন্ধ করে রাখো না)। রোহিতের কথা সম্ভবত সবার কানে পৌঁছয়নি। বা সবাই গুরুত্ব দেননি। কারণ পরের দিকে আরও অন্তত বার দুয়েক ফোন বাজল। রোহিত তাতে বিশেষ আমল দিলেন না।
মাঝে আবার একটি সমস্যা তৈরি হল। প্রশ্ন করতে গিয়েছিলেন এক সাংবাদিক। মাইক বিগড়ে গেল। বিরাট ঘরের এক প্রান্ত থেকে মাইকের সাহায্য ছাড়া রোহিতের কানে সেই গলা পৌঁছচ্ছিল না। মাইক পরীক্ষা করার জন্যে সেই সাংবাদিক ‘হ্যালো, ওয়ান-টু-থ্রি’ বলে পরখ করলেন। উল্টো দিকে বসা রোহিতও তখন বলতে লাগলেন, ‘হ্যালো, ওয়ান-টু-থ্রি’। ঘরের বাকিরা তত ক্ষণে হাসতে শুরু করলেন। যেটুকু গুরুগম্ভীর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল হঠাৎ করেই তা হালকা হয়ে গেল।
শেষটা হল ভাল ভাবেই। রোহিত জানিয়ে গেলেন, বেশি উত্তেজিত তাঁরা হচ্ছেন না। আর একটাই ধাপ। পেরিয়ে গেলেই জীবনের অন্যতম সেরা পুরস্কার হয়তো পাওয়া হয়ে যাবে।
নির্বাহী সম্পাদক