Home » কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের পাশের গাছ কর্তন

কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের পাশের গাছ কর্তন

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় নির্মাণাধীন কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের বিভিন্ন স্থান থেকে রেললাইনের দুই পাশের সেগুন, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় গাছ কেটে নিয়েছে  দুর্বৃত্তরা। রেলওয়ে বিভাগের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হচ্ছে- এমন মিথ্যা তথ্য সবাইকে বিভ্রান্ত করে গাছ কাটে তারা। 

অবৈধভাবে এসব গাছ কাটার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া কামাল উদ্দিনের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে।

 

 

এর আগে গাছ কাটার ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বড়লেখা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের বড়লেখা অংশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুর্বৃত্তরা প্রায় ২০০ গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। বড়লেখা রেলস্টেশন, কাঠালতলী স্টেশন, দক্ষিণভাগ স্টেশন ও রতুলী এলাকায় সেগুন, বড় রেইনট্রি, কাঁঠাল, একাশিয়াগাছ কাটা হয়েছে। স্টেশন এলাকার বাইরের অংশেও গাছ কাটা হয়েছে।

কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন পুরোনো হয়ে যাওয়ায় তা তুলে ফেলে নতুন রেললাইন বসানো হচ্ছে। এ নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে টেক্সমাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। তারা জানায়, ১ আগস্ট বড়লেখা উপজেলার রতুলী এলাকায় অনেকগুলো গাছ কাটা হলে বিষয়টি টেক্সমাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের লোকজনের নজরে আসে।

 

ওই দিনই টেক্সমাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের স্থানীয় কাজের তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেফটি কর্মকর্তা পীযুষ দেবনাথ কামাল উদ্দিন (৪৫) নামের একজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে অভিযুক্ত করে বড়লেখা থানায় মামলা করেন। পুলিশ সেদিন রাতেই কামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নির্মাণ কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের চুক্তি হচ্ছে, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন নির্মাণ শেষে রেললাইন ও এর দুই পাশের গাছপালা বাংলাদেশ রেলওয়েকে বুঝিয়ে দিতে হবে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ, কাঠালতলী ও বড়লেখা রেলস্টেশন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা রেললাইনের পাশে রেলওয়ের জায়গায় থাকা গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ গত ১ আগস্ট বেলা একটার দিকে বড়লেখা উপজেলার রতুলী রেলওয়ে ব্রিজ নম্বর-২৪৭ এলাকা থেকে কামাল উদ্দিনসহ ৭-৮ ব্যক্তি শ্রমিক নিয়ে ২৮টি একাশিয়াগাছ কেটে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি দেখে বাদীসহ (সেফটি কর্মকর্তা) তাঁর কার্যালয়ের লোকজন কামাল উদ্দিনকে গাছ কাটার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, তিনি রেলওয়ের লোক। রেলওয়ের অনুমতি নিয়ে গাছ কাটছেন। এরপর সেফটি কর্মকর্তা পীযুষ দেবনাথ তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটার বিষয়টি জানান। কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কেউ গাছ কাটছেন না। গাছ কাটার বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো তথ্য নেই।

সেফটি কর্মকর্তা পীযুষ দেবনাথ বলেন, ‘আমরা সংবাদ পাই রতুলীতে গাছ কেটে নিচ্ছে কে বা কারা। এখানে রেলওয়ের পক্ষে আমরা (টেক্সমাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড) দায়িত্বে আছি। গাছ কাটাসহ কোনো কিছু হলে রেলওয়ে থেকে আমাদের জানানোর কথা। কামাল উদ্দিন নামের ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে সব জানে। তিনি নিজেকে কন্ট্রাক্টর দাবি করেন।’

 

পীযুষ দেবনাথ বলেন, ‘আমরা দায়িত্বে আছি, আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। এরপর আমরা রেলওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। মামলা করি।’

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান অবৈধভাবে গাছ কাটা ও একজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *