পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে রাজ্য সরকার ও রাজভবনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছেই। সেই আবহে এ বার শান্তি ও সম্প্রীতি কমিটি গড়লেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি শান্তি ও সামাজিক সংহতি কমিটি গঠন করেছেন।” একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হতে সম্মত হয়েছেন। ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, “এই কমিটি সমাজে হিংসা প্রতিরোধ করার পাশাপাশি আগামী দিনের ছাত্র সমাজকে শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেবে।” রাজভবন সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে যে ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে চিন্তিত রাজ্যপাল বোস। ওই সূত্রের মতে, কোনও অবস্থাতেই যাতে রাজ্যে আর অশান্তির ঘটনা না ঘটে সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ করেছেন তিনি।
এর আগে রাজভবনে ‘শান্তিকক্ষ’ গড়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্ত্রাস কবলিত এলাকা ভাঙড়, ক্যানিং, বাসন্তী-সহ কোচবিহারেও গিয়েছিলেন তিনি। রাজ্যপালের এই সব পদক্ষেপে ‘বেজায় চটেছে’ নবান্ন। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলও ‘চাঁচাছোলা’ ভাষায় আক্রমণ করেছে রাজ্যপালকে। কিন্তু তাতেও নিজের কাজের ধরন বদলাননি বোস। বরং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনি রাজভবনে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ও পালন করেন। এমনকি, ডেকে পাঠানোর পর রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজীব সিংহ রাজভবনে না যাওয়ায়, তাঁর ‘জয়েনিং রিপোর্ট’ নবান্নে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তৃণমূল রাজ্য নির্বাচন কমিশনে রাজ্যপালের নামে অভিযোগও জমা দিয়েছে ইতিমধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তাঁকে নাম করে বিজেপির এজেন্ট বলেও আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এমতাবস্থায় রাজ্যপাল শান্তি ও সম্প্রীতি কমিটি গড়ে রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের ‘রোষানলে’ পড়বেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের কাছে খামবন্দি এক রিপোর্ট পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের সন্ত্রাস কবলিত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখে আসা অভিজ্ঞতার কথা সেই রিপোর্টে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। ওই সব জায়গায় অশান্তি মোকাবিলা করে কী ভাবে শান্তি ফেরাতে হবে, সেই বিষয়েও নির্বাচন কমিশনারকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
Leave a comment