Home » এসএসসি/দাখিল/ সমমান পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে : মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন

এসএসসি/দাখিল/ সমমান পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে : মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন

আসন্ন এসএসসি/ দাখিল/ সমমান পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জানাই সালাম এবং শুভেচছা। ১০টি বছর পড়াশোনার পর বহুল প্রতিক্ষিত এসএসসি পরীক্ষা আগামী ৩০ শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

কিভাবে পরীক্ষাটি সুষ্টুভাবে সম্পাদন হবে তার জন্য সরকারের শিক্ষা পরিবারের অনেক প্রস্তুতি/দৌড়ঝাপ থাকে। থাকে অনেক গোপনীয়তা। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ব্যস্ততা বা অনেক সময় হা-হুতাশও লক্ষ্য করা যায়।
সব ধরণের চ্যালেন্জ মোকাবিলা করে একজন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। চাপমুক্ত ভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা একজন শিক্ষার্থীর জন্য অনেক গর্বের বিষয়। এটা একটা আর্ট বা শিল্পও বটে।

প্রিয় পরীক্ষার্থীরা, পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন একটু আগেই বাসা/ বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। যদি যানজটের সম্ভাবনা থাকে তাহলে ৩০/৩৫ মিনিট আগে যাহাতে কেন্দ্রে পৌঁছানো যায় সে রকম ব্যবস্থা আগে থেকেই ঠিক করে রাখবে। প্রথম দিন কেন্দ্রে পৌঁছে নিজ আসন বের করবে। প্রথমেই নোটিশ বোর্ড দেখে পরীক্ষার্থীর সিট কোন হলে পড়েছে সেটা বের করতে হবে। পরীক্ষার্থী তার নির্ধারিত আসন বের করার পর অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সাথে কুসল বিনিময় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবে। এরপর চুড়ান্তভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মনোযোগ দিতে হবে।

হল পর্যবেক্ষক হলে প্রবেশের সাথে সাথে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রর্দশন করবে। পরীক্ষার পেপার দাঁড়িয়ে সম্মানের সাথে গ্রহণ করবে এবং বৃত্তভরাট শুরু করবে। বৃত্তভরাটের সময় রেজিষ্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর, গ্রুপ, বোর্ডের নাম, পরীক্ষার নাম, বহুনির্বাচনি প্রশ্নের সেট কোডের বৃত্ত ভরাট সঠিকভাবে করতে হবে। কোন রকম ভুল হলে সাথে সাথে পরিদর্শককে জানাতে হবে এবং সঠিক বৃত্তভরাট করে নিতে হবে।

প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর প্রথমে পড়ে নিবে। তারপর যে প্রশ্নের উত্তর সব থেকে ভাল জানা সেটার উত্তর আগে দেওয়াই উত্তম। খেয়াল রাখবে একই প্রশ্নের বিভিন্ন অংশ যেমন ক, খ, গ, ঘ এর উত্তর পর্যায়ক্রমে দিতে হবে। কোন ভাবেই এক প্রশ্নের উত্তরের সাথে অন্যটি মিলাবে না।
প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় ‘সময়ের’ দিকে নজর রাখতে হবে। যাহাতে সবটি প্রশ্নের আনসার ঠিকমত করা যায়। পরীক্ষার শেষ ১৫ মিনিট একটু রিভিশন দিবে এবং প্রশ্নের নম্বর মেলাবে।

এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবে:
১। পরীক্ষার এডমিট কার্ড পাওয়ার পর তার কয়েকটি ফটোকপি করে বাসায় সংরক্ষণ করবে , কোন কারনে মূলকপি হারিয়ে গেলে ফটোকপি প্রধান শিক্ষক কর্তৃক সত্যায়িত করে পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়া যায়।
২। পড়ার টেবিলের সামনে পরীক্ষার রুটিনের এককপি লাগিয়ে রাখবে ।
৩। পরীক্ষার একটি বিষয় শেষ হওয়ার পর, পরবর্তী পরীক্ষার বিষয় রুটিন দেখে নিশ্চিত হয়েই প্রস্তুতি নিবে ।
৪। পরীক্ষার পূর্ব রাতে কখনই রাত জাগবে না । যথা সম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে রিভিশন দিবে ।
৫। পরীক্ষার বিষয় নিয়ে কোন অবস্থাতেই বাড়তি চাপ বা টেনশন নিবে না আর কোন কিছুতেই তাড়াহুড়া করবে না ।
৬। পরীক্ষার আগের রাতেই এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, স্কেল, কলম, পেনসিল, ক্যালকুলেটর ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফাইলে রেডি করে রাখবে ।
৭। হালকা ব্যবহারকৃত কিছু কালো বলপয়েন্ট কলম রাখবে তাতে হাতের লিখার গতি পাবে যা নতুন কলমে কিছুটা সমস্যা হয় ।
৮। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বেই পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করবে । সেই কারনে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হবে।
৯। রোল নম্বর , রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোড বক্সে অবশ্যই ইংরেজিতে নাম্বার লিখবে এবং খুবই সতর্কতার সাথে বৃত্ত ভরাট করবে কালো বল পয়েন্ট কলম দ্বারা । কোন অবস্থাতেই নীল, পেন্সিল বা কালো জেল পেন দিয়ে বৃত্ত ভরাট করবে না ।
১০। সতর্কতার সাথে বৃত্ত ভরাট করতে গিয়েও যদি ভুল হয়ে যায় তবে টেনশন না করে পরীক্ষার হলের দায়িত্বরত পর্যবেক্ষককে অবশ্যই বলবে । উনি ঠিক করে দিবে । আর ভুল হওয়ার পরেও সঠিক নাম্বারটি অবশ্যই বৃত্ত ভরাট করে দিবে ।
১১। নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন পাওয়ার পর সবার আগে সেট কোড দেখে তা সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করবে । সেট কোডের ভুল সংশোধন করা জটিল বিষয়।
১২। হিসাববিজ্ঞান ব্যতীত অন্যান্য বিষয়গুলোতে খাতার মার্জিন দিবে এবং এই মার্জিন কোন অবস্থাতেই এক স্কেলের যেন বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে ।
১৩। পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই স্ব স্ব বিদ্যালয়ের ইউনিফর্ম পরিধান করে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করবে এবং পরীক্ষার হলের পর্যবেক্ষক ও সহপাঠীদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করবে ও সুসম্পর্ক বজায় রাখবে ।
১৪। পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে নিজের অর্জিত জ্ঞাণ আনন্দের সাথে বহিঃপ্রকাশের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করবে ।
১৫। পরীক্ষার হলে তোমার সিটের আশেপাশে অপ্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র থাকলে তা পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে আনবে, তা পরিষ্কার করে ফেলবে।
১৬। পরীক্ষাকে ভয় না পেয়ে উৎসব হিসেবে গ্রহন করতে হবে।
সকলের প্রতি শুভকামনা রইলো।

 

লেখক
মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন
প্রধান শিক্ষক
সীমান্তিক আইডিয়াল স্কুল, সিলেট।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *