নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা চাউলধনী হাওর রক্ষা ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলন কমিটির ব্যানারে সিলেটে আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধনে বক্তারা ডাবল মার্ডারের খুনীদের গ্রেফতার করে বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালতে ফাঁসির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ডাবল মার্ডারের আসামীরা প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরাফেরা করলেও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বুঝা যাচ্ছে, প্রশাসন আসামীদের জামাই আদর করে তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। খুনি সাইফুল ও তার টাকার কাছে সবাই হার মেনে গেলেও চাউলধনী হাওরপারের কৃষকরা মুত্যু না হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে হুসিয়ারী উচ্চারন করেন। খুনিরা আইনের ফাঁকফোকরে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালতে সারেন্ডারের আদেশ নিয়ে আসলেও সময়সীমা পার হওয়ার পরও তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বাদীপক্ষ বারবার প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করলেও কেউ কোন কর্ণপাত করছেন না। অথচ হত্যাকান্ডের পর খুনিদেরকে ৭০ফুট মাটির নিচে লুকিয়ে থাকলেও গ্রেফতারের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। প্রশাসনের সেই কথা এখন গেল কই! আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও গ্রেফতার কেন হচ্ছে না? আসামীরা আরও দু-একটি হত্যাকান্ড ঘটালে প্রশাসন শান্তি পাবে এমনও অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, বন্দুক দিয়ে গুলি করে হত্যার পর ১৫জন আসামী কিভাবে জামিন পায় তা আমরা জানিনা। আমরা খুনিদের জামিন বাতিল চাই। খুনি সাইফুল, নজরুল, সদরুল, আছকির, সিরাজ ১৩ অক্টোবরের মধ্যে নিম্ন আদালতে সারেন্ডারের শেষ সময়সীমা থাকলেও হাজিরা না দিয়ে সিলেট শহরে ঘুরাফেরা করছে এবং বাদী ও স্বাক্ষীদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন, কিন্তু খুনিদেরকে প্রশাসন গ্রেফতার করছে না। আমরা কৃষক সমাজ খুনীদের গ্রেফতারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় চাউলধনী হাওরপারের ৩০/২৫টি গ্রামের কৃষকরা সিলেটের ক্বীনব্রীজ থেকে ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে মিছিল শুরু করে সুরমা মার্কেট হয়ে মধুবন পয়েন্ট ঘুরে জেলা পরিষদের সামনে এসে এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তরা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন । এসময় বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল কালাম, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সামছুদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া, আব্দুল মজির মেম্বার, নজির উদ্দিন, মাওলানা ছমির উদ্দিন, ইব্রাহিম আলী সিজিল, আহমদ আলী, আফজল হোসেন, আব্দুল কাদির, আখতার হোসেন, হোসেন আহমদ, আব্দুল মুমিন, সুরত মিয়া, বাবলু মিয়া, লুৎফুর রহমান, শফিকুর রহমান, কুতুব আলী, রিপন মিয়া চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, জুয়েল আহমদ, রুহেল মোস্তফা মিয়া, আব্দুল মনাফ, আমিনুর রহমান, সাইদ আলী, চেরাগ হোসেন প্রমুখ।
উত্তেজিত জনতা সিলেট থেকে বিশ্বনাথে ফিরে গিয়েও বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে মিছিল সমাবেশ করেন।
মিছিলকারীরা ডাবল মার্ডারের খুনিদের গ্রেফতার কর, ফাঁসি চাইসহ বিভিন্ন শ্লোগান দেন। তাদের হাতে খুনি সাইফুল, সদরুল, নজরুল, বশর, আছকির, সিরাজ, শাহিনের ফাঁসি চাই, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চাই, চাউলধনী হাওরের লীজ বাতিল চাই ইত্যাদি শ্লোগানসহ বিভিন্ন ব্যানার ফেষ্টুন বহন করেন। বিশ্বনাথে পথ সভায় চাউলধনী হাওরের সুবিধাভোগীদের ও খুনীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানানো হয়।