ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি এটিও মনে করা হয় যে, ঘুম হচ্ছে সব রোগের ওষুধ। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা রাতে অনেক দেরি করে ঘুমাতে যান এবং অপর্যাপ্ত ঘুমান।
শরীরের অন্যান্য সব অতিপ্রয়োজনীয় উপাদানের মধ্যে ঘুমও কিন্তু অন্যতম। কারণ ঘুমের সময় আমাদের শরীর বিশ্রাম নিতে পারে। আর এটির ফলে শরীরের অনেক সমস্যারও সমাধান হয়ে যায়।
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না। এমনকি ২০১০ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত কম ঘুমানো তাড়াতাড়ি মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের জন্য আবশ্যক। এ পর্যাপ্ত না ঘুমালে তা শরীরের ওপর অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে। চলুন জানা যাক এটি কতটা ক্ষতিকর—
১. মস্তিষ্কের ক্ষতি করে
ঘুমানোর সময় আমাদের মস্তিষ্কের রিচার্জ হয়ে থাকে। এ সময় মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রক্রিয়া এবং ঘটনা ব্রেনে স্টোর করার কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ কারণে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সেটি স্মৃতিশক্তির ওপরে খারাপ প্রভাব ফেলে। এতে মনোযোগ এবং বুদ্ধি কমে যেতে পারে।
২. চিন্তা-ভাবনায় প্রভাব ফেলে
অপর্যাপ্ত ঘুম আমাদের মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলে বলে এটি আমাদের চিন্তা-ভাবনাকেও প্রভাবিত করে। এটির কারণে আপনার সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়
নিয়মিতভাবে কম ঘুমানোর ফলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এর কারণে ঠাণ্ডা, সর্দির মতো রোগর আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগব্যাধি খুব সহজেই আপনাকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।
৪. উচ্চরক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি করে
রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমানোর কারণে শরীরের অভ্যন্তরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে যেটি রক্তচাপের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতি হয়ে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না করা হলে সেটি হার্টঅ্যাটাক পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
৫. ওজন বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন অন্তত ছয় ঘণ্টার কম সময় ঘুমানোর কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এ ছাড়া এর চেয়েও কম ঘুমানোর কারণে হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কা স্বভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কম ঘুমানো তাড়াতাড়ি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।
৬. চেহারায় প্রভাব ফেলে
অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা পড়ে। আর এটি নিয়মিতভাবে চলতে থাকলে সেটি শরীরের অনেক ক্ষতি করে এবং এটির প্রভাব শরীরের বাইরে চেহারাতেও দেখা দিতে পারে। এর কারণে চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি ছাড়াও ত্বকের কোলাজেনের মাত্রা কমে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।