প্রায় ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আজ রোববার বিকেল ৩টায় শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আগস্টের শেষ দিকে সংক্রমনের হার কমে যাওয়াতে তারা ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। সেদিন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু করবে। তবে এক্ষেত্রে কিছু সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেছেন, যেহেতু প্রায় ১৭ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলছে, তাই খোলার জন্য সার্বিক প্রস্তুতির দরকার রয়েছে। একই সঙ্গে নতুন পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু করলেও সেখানে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন এবং নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
যেসব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে-
০১। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে।
০২। স্কুলে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্কুলে যেতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
০৩। চলতি বছর এবং সামনের বছর যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দেবে, তাদের প্রতিদিনই ক্লাস নেয়া হবে।
০৪। প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাসও চলবে প্রতিদিন।
০৫। প্রাথমিক স্কুলে প্রথম হতে চতুর্থ শ্রেণী এবং হাইস্কুলে ষষ্ঠ হতে অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস চলবে সপ্তাহে একদিন করে।
০৬। স্কুলে কোনো অ্যাসেম্বলি হবে না। খেলাধূলা হবে স্বল্প পরিসরে। লাইন বেধে ক্লাসে ঢুকতে হবে এবং বেরুতে হবে।
০৭। শুরুতে দিনে ৪ হতে ৫ ঘণ্টা করে ক্লাস নেয়া হবে। পরে সময় আরও বাড়ানো হবে।
০৮। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সিন্ডিকেটের সভা করে খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকার প্রতিদিনের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিভিন্ন শ্রেণীর জন্য স্কুলের সময় এবং দিনের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। যদি সংক্রমন বেড়ে যায়, প্রয়োজন হলে আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যায় সেজন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সম্পৃক্ততার ওপরও গুরুত্ব দেন শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আরও সচেতনতা তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারির পর গত বছরের মার্চের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রতিনিধি