ছাতক পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের পর এবার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শহর জুড়ে চলছে তোলপাড়।
জানা গেছে, মহিলা কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে তিনি এই অভিযোগটি দায়ের করেন। থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলার পর কোর্টে মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে শহর জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত (২৭ আগষ্ট) পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা ও অসৌজন্যমূলক আচরের ঘটনায় কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলীকে প্রধান আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে ছাতক থানায় একটি মামলা (নং-২৮) দায়ের করেন পৌরসভার অফিস সহায়ক দ্বীপ্ত বণিক। এ মামলায় আসামী করা হয় কাকলীর স্বামী মাছুম আহমদ, ভাই নোমান ইমদাদ কানন ও কার্জন মিয়াকে। এছাড়া ২৫ জনকে করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আসামী।
এদিকে, মহিলা কাউন্সিলর কাকলীর বিরুদ্ধে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়েরের চারদিন পর গত (৩১ আগস্ট) সুনামগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি দায়ের করেন, পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী।
পৌরসভার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত (১৮ আগস্ট) পৌরসভার বাগবাড়ি এলাকার ব্যাটারী চালিত টমটম গাড়ির স্ট্যান্ড থেকে অবৈধ চাঁদাবাজির ঘটনায় কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী, তার স্বামী এবং দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত একটি অভিযোগ করেন, স্ট্যান্ড ম্যানেজার। লিখিত অভিযোগটি তদন্ত চলাকালে (২২ আগস্ট) দুপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগকারী টমটম স্ট্যান্ডের ম্যানেজার ওয়াতিকুল, নুর হোসেন ও বিরাম আলীরা পৌর মেয়রের কক্ষে উপস্থিত হন।
হঠাৎ করে অভিযুক্ত কাউন্সিলর কাকলী পৌর মেয়রের কক্ষে উপস্থিত হয়ে বহিরাগতদের নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অফিস তছনছ করেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে পরিষদের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা কর্মচারিদের সাথে বৈঠক করে রেজুলেশন করে পৌর কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলীসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে পৌরসভার অফিস সহায়ক দ্বীপ্ত বণিক বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে থানায় তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হয় মামলা।
এ বিষয়ে ছাতক পৌরসভার কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী জানান, থানায় অভিযোগ গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, পৌরসভায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় পৌর সভার পক্ষ থেকে থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ সত্য ঘটনাটিকে আড়াল করতে তার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক একটি অভিযোগ দায়ের করেছে কাউন্সিলর কাকলী।
থানার (ওসি) শেখ নাজিম উদ্দিন থানায় দায়ের করা মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।