শাহিন আহমেদ : আগামী এক মাসের মধ্যে শিউলি বেগমের (২০) কোল জুড়ে আসতো ফুটফুটে একটি শিশু। দীর্ঘ ১০ মাসের অন্ধকার পেরিয়ে হয়তো শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখতে পেত। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী অপেক্ষায় ছিলেন তার। তিনি হয়তো প্রতিদিন তার নড়াচড়া অনুভব করতেন। কিন্তু তা আর হলো না। ফাঁসিতেই ঝুলতে হলো তাকে। নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মায়ের গর্ভেই নিঃশ্বাস ফুরিয়ে গেল শিশুটির।
মঙ্গলবার (২৯ মে) দিনগত রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের বেরিরচর এলাকায় এমনই এক সন্তান সম্ভাব্য নয় মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শিউলি ওই এলাকার দুরুদ আহমদের স্ত্রী। তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন। আগামী মাসে তার সন্তান পৃথিবীতে আসার কথা ছিল বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
নিহত শিউলির শ্বাশুড়ী রূপজান বেগম জানান, সন্ধ্যায় ইফতারের পর শিউলি তার ঘরে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন। অনেকক্ষণ তার কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাকে দেখতে পান। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কি কারণে সে আত্মহত্যা করেছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
শিউলির মা মনি বেগম বলেন, শিউলির স্বামী দুরুদ মিয়া নানা সময় মেয়েকে নির্যাতন করতেন। গত বছর রমজান মাসে তার মেয়ের সঙ্গে দুরুদের বিয়ে হওয়ার পর থেকে সে সুখি ছিল না। শিউলি স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে, না কি দুরুদ তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে তা আমি জানি না।
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাব্বির আহসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।