Home » দুই-চারটা নাটক-বিজ্ঞাপন করলেই অভিনেত্রী-মডেল হয়ে যায় না-শাহনাজ খুশি

দুই-চারটা নাটক-বিজ্ঞাপন করলেই অভিনেত্রী-মডেল হয়ে যায় না-শাহনাজ খুশি

অপরাধে জড়িয়ে নামধারী মডেলদের গ্রেফতার নিয়ে শোবিজে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে গত সোমবার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। স্ট্যাটাসে নিজের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে তিনি বলেন, একজন মানুষ হঠাৎ কিছু টাকা, কিংবা ত্রাণ বিতরণ করে অথবা মেম্বার/চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে, কোন রাজনৈতিক দলে নাম লেখালেই যেমন রাজনীতিবিদ হয়ে যায় না, তেমনি কেউ কোন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় আবেদন করেছিল অথবা সম্পর্কের সুবাধে বা টাকা/ক্ষমতার জোরে, ২-৪ টা নাটক, বিজ্ঞাপনের কোন এক কোনায় অংশগ্রহণ করলেই সে মডেল বা অভিনেত্রী হয়ে যায় না।

এখন তো কারো অভিনয় করার শখ থাকলেই প্রোফাইল ফাইল আপ করে মডেল/অভিনেত্রী লিখে দেয়! ‘রাজনীতিবিদ, অভিনেত্রী/মডেল’ এ বিশেষণগুলো বিশেষিত হবার জন্য, নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য। লোভ সংবরণ করে, রোজ একটু একটু করে সীমাবদ্ধ অন্ধকার দু-হাতে পেছনে ঠেলে, ঐতিহ্যের আলোর নিচে দাঁড়াতে হয়। মানুষের ভালবাসার পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হতে হয়। প্রতিদিনের চর্চায় বিন্দু বিন্দু করে অভিনেত্রী/রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে হয়। ধারন করতে/বহন করতে হয় সেটা, উঠাবসা, কথা, পোশাক, রুচি, পরিমন্ডল, পরিবার, দর্শন, ইত্যকার যাবতীয় সব কিছু। মডেল ‘মৌ’ দেখে রীতিমত ঘাবড়ে গেলাম। কারণ, মডেল মৌ বলতে সারা দেশের মানুষ সাদিয়া ইসলাম মৌকেই জানে। বারবার একই হেডিং-এর ফলে বিব্রত হতে হয়, অভিনয় এবং মডেলিং পেশায় থাকা মানুষের পরিবারগুলোকে।

কারো ব্যক্তিগত উশৃংখলতাকে এত প্রচার করারই বা কি আছে? তাও কিনা যখন দেশে প্রতিদিন গড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলোর বিরামহীন লাশ এবং রোগী টানার সাইরেনে কাতর হচ্ছে সমগ্র শহর/গ্রাম। ডেংগুসহ চিকিৎসা ব্যবস্থার নানা সীমাবদ্ধতা নিয়ে দিশেহারা সারাদেশের মানুষ। প্রিয়জন হারিয়ে সান্ত্বনার জায়গা নাই কারো। মৃত্যু এখন সংখ্যা শুধু, সেখানে প্রহসনের এই নিউজগুলো এত ফলাও করবার কি প্রয়োজন আছে? ব্যক্তিগতভাবে আমার বেশি খারাপ লাগে এটা ভেবে যে, ইন্টানেটের কারণে সারা দুনিয়া জানছে এ কথা। সে হোক কোন ক্রিকেটার/মডেল/অভিনেত্রী/ব্যাংকার অথবা গৃহবধু! সব তো এই ছোট/অসুস্থ দেশটার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ। যাদের নিউজ নিয়ে এত হামলে পড়েছেন তাদেরকে এই নিউজের আগে, ঔ পরিচয়ে কেউ চিনতো না, অথবা কেউ হয়তো তার কাজ থেকে সরে গেছে বহু বছর আগেই। মিডিয়া পচলে দেশ আলোকিত হবে না। মিডিয়াই দেশের একটা ঐতিহ্যের আলো ধরে রাখে, বহন করে। পারলে সে আলোটুকু রক্ষা করেন। এসব আগাছা নীরবে বেছে ফেলেন। আর হ্যাঁ, আগাছা কিন্তু আগাছাই। এর কোন আলাদা নাম নাই, আলাদা পদ নাই। না সংস্কৃতিতে, না রাজনীতিতে।

সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *