করোনা সংক্রমণের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার বিষয়ের আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুনির্দিষ্ট একটা সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (২ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার।
রিটের শুনানিকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলবেন অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ব্যাপারে। যদিও গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রেসের সামনে বলেছেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের টিকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আমার মনে হয়, এই বিষয়টি একটি সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসা প্রয়োজন। অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলবেন তিনি যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যাতে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে দেয়। যেহেতু মন্ত্রী বলেছেন, সেহেতু আমরা ফরমাল কোনও আদেশ দিচ্ছি না। অ্যাটর্নি জেনারেল যেন যোগাযোগ করেন এবং এ বিষয়ে একটা পরিষ্কার বক্তব্য আসে।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস আদালতকে বলেন, আদালতে শুনানি শেষ হলেই জানিয়ে দিচ্ছি। এরপর রিট আবেদনটি মূলতবি করেন আদালত।
এর আগে দেশজুড়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩১ জুলাই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। তারা হলেন- ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এবং ব্যারিস্টার মো. মোজাম্মেল হক।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআর-এর পরিচালককে বিবাদী করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হন। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করেন। করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ হাজার হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী মারা যাচ্ছেন। সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা ব্যবস্থা করা গেলে অনেক হতাহত কমিয়ে আনা সম্ভব।
রিট আবেদনকারীদের একজন অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী নিজেও একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী উল্লেখ করে আবেদনে আরও বলা হয়, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনওভাবেই করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারছেন না। তিনি তার অনাগত সন্তান এবং নিজেকে নিয়ে শঙ্কিত।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ জুলাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি অগ্রাধিকারভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনা টিকা প্রদান করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তবে সে নোটিশের কোনও জবাব না পাওয়ায় উক্ত রিট দায়ের করা হয়।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
বার্তা বিভাগ প্রধান