ইসরাইলের তৈরি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও রাজনীতিকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফোনে নজরদারি চালানোর ঘটনা সামনে এসেছে।
ইসরাইলি সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসও) তৈরি এই হ্যাকিং সফটওয়্যার কিনে বিভিন্ন দেশের ক্ষমতাসীন সরকারই এই নজরদারি চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
পেগাসাস পৌরানিক এক পক্ষীরাজ ঘোড়ার নাম।ভারতীয় ও গ্রিক পুরানে উল্লেখ আছে এই পক্ষীরাজ ঘোড়ার। সেই পৌরানিক ঘোড়ার নামেই নিজেদের তৈরি এই হ্যাকিং সফটওয়্যারের নাম দিয়েছে এনএসও।
যেভাবে ফোন হ্যাক করে পেগাসাস
পেগাসাস খুব সহজেই যে কারো ফোনে প্রবেশ করানো যায়। কোনো লিংকের মাধ্যমে এই ম্যালওয়্যার আইফোন কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে পাঠানো যায়। সেই লিংক ফোনের ব্যবহারকারী ক্লিক করলেই তার ফোনে সক্রিয় হয়ে যায় এই স্পাইওয়্যার। আবার ভয়েস কলের মাধ্যমেও এই সক্রিয় করা যায়। সংশ্লিষ্ট ফোনের ব্যবহারকারী তা টেরও পাবেন না।
এই ম্যালওয়ার আইফোন কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ঢুকে ব্যবহারকারীর মেসেজ, ছবি, ইমেইল পাচার করতে পারে। একইসঙ্গে কল রেকর্ড এবং গোপনে মাইক্রোফোন চালুও রাখতে পারে এই ম্যালওয়ার।
ফোনের মাধ্যমে বলা কথা, বার্তা, ম্যাসেজ, ছবি, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, এমনকি ছবিও পেগাসাসের মাধ্যমে গ্রাহক পেতে পারে। ফোনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে প্রতিটি তথ্যই ওই গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারে।
তবে এনএসও’র দাবি তারা এই সফটওয়্যার শুধুমাত্র কোনো দেশের সরকারকেই বিক্রি করে। কোনো ব্যক্তিকে নয়। ২০১৯ সালে এই স্পাইওয়্যারের বিষয়টি সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। ২০১৬ সাল থেকে এনএসওর গ্রাহকেরা এসব নম্বরে আড়ি পেতেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ২০১৪ সালে পেগাসাসের প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল । এক আরব মানবাধিকার কর্মীর আইফোন হ্যাক করার সময় এই সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল। এরই জেরে আইফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাপল ঘটনার কয়েক দিন পর তাদের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট প্রকাশ করেছিল।
২০১৭ সালে সাইবার সুরক্ষা গবেষকরা জানিয়েছিলেন, এ ধরনের সফটওয়্যার অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক স্মার্টফোনে সহজেই ব্যবহার করা যায়। ২০১৯ সালে এনএসওর সঙ্গে পেগাসাস নিয়েই ফেসবুকের মতোবিরোধ প্রকাশ্যে আসে। বর্তমানে পেগাসাস সবচেয়ে পরিশীলিত হ্যাকিং সফটওয়্যার।
বার্তা বিভাগ প্রধান