Home » ঘাটে আটকে আছে পণ্যবাহী ট্রাক, কাঁচামালে ধরছে পচন

ঘাটে আটকে আছে পণ্যবাহী ট্রাক, কাঁচামালে ধরছে পচন

শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে আটকে থাকা যানবাহনের সারি বিশ্বরোডের খায়েরপট্রি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছে। এতে আটকা পড়েছে চার শতাধিক কাঁচামালবাহী যানবাহন। কোনও কোনও ট্রাকচালক গত পাঁচ দিন ধরে ঘাট এলাকায় আটকে রয়েছেন। ফলে তাদের গাড়িতে থাকা কাঁচামাল পচতে শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন।

ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীবাহী বাস পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। গরু বোঝাই ট্রাক ও যাত্রীবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। বিশ্বরোডের খায়েরপট্টি থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কে কাঁচামালের ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

গাড়ি নিয়ন্ত্রণের জন্য শরীয়তপুরের ট্রাফিক পুলিশ ও ডিবি কাজ করে যাচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাকচালকদের অভিযোগ, তাদের পার না করে শুধু গরু বোঝাই ট্রাক পার করছে। এতে তাদের পণ্য পচে যাচ্ছে একইসঙ্গে লোকসানের মুখে পড়ছে।

ট্রাক নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত পাঁচ দিন আগে ঘাটে এসেছি। গরুর গাড়ি ও যাত্রীবাহী গাড়িকে আগে যেতে দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ দিনে সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা সব শেষ। আমাদের পেঁয়াজে পচন দেখা দিয়েছে। আজকে যদি যেতে না পারি তাহলে মালিক আমাদের এ পণ্য নেবে না।’

সাতক্ষীরা থেকে আসা আরেক চালক রাজু বলেন, ‘১২ জুন ঘাটে এসেছি। এখনও যেতে পারিনি। আমারও পেঁয়াজে পচন ধরেছে। আজকে যেতে না পারলে সব পেঁয়াজ পচে যাবে। আমি মহাজনকে কী জবাব দেবো।’

শরীয়তপুরের ডামুড্যা থেকে আসা সুমন অভিযোগ করে বলেন, ‘এখানে ফেরিতে জোরপূর্বক ভাড়া বেশি নিয়ে থাকে। আমি গতকাল এখান থেকে যাওয়ার সময় ১৫০০, আসার সময় ১৭০০ টাকা নিয়েছে। ভাড়া সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা আছে। আমার ছোট্ট একটা এক টনের পিকআপ। এত ভাড়া হওয়ার কথা না।’

যশোর থেকে আসা ট্রাকচালক আব্দুর রহিম বলেন, ‘পাঁচ দিন আগে ঘাটে এসেছি। আমাদের খোরাকির টাকা শেষ হয়ে গেছে। বাড়ি থেকে বউ রাগারাগি করছে টাকা পাঠানোর জন্য। এখন খুব সমস্যায় আছি।’

ফেরিঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. খুরশীদ আলম সিকদার বলেন, ‘আমরা গাড়ি সুন্দরভাবে ফেরিতে ওঠানোর জন্য কাজ করি। ঘাটে যানজট যাতে না হয়, সে জন্য আমরা ট্রাফিক পুলিশ সবসময় কাজ করছি।’

জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘাটের নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করছি। যাতে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে।’

ঘাটের ইজারাদার চরসেনসাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিতু মিঞা ব্যাপারি বলেন, ‘ফেরি আরেকটি বাড়ানো হয়েছে। ফলে রাতের মধ্যেই সব যানজট নিরসন হবে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ম্যানেজার আব্দুল মমিন বলেন, ‘এই ঘাটের আরেকটি সংযোগ করায় বর্তমানে সাতটি ফেরি চালু রয়েছে। গত দুই দিন ধরে গাড়ির চাপ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গরু বোঝাই ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসকে প্রাধান্য দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। আশা রাখি, রাতের ভেতরেই যানজট কমে যাবে।’

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *