একমাত্র টেস্টে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে ট্রফি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দল। এবার মিশন ওয়ানডে সিরিজ। আজ (শুক্রবার) হারারেতে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে। দুপুর দেড়টায় প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামছে সফরকারীরা। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি-স্পোর্টস।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে একটি পরিসংখ্যান বাংলাদেশ দলকে নিশ্চিতভাবেই উজ্জীবিত করবে। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে টানা ১৬ জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে মাঠে নামছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষবার হেরেছিল ৮ বছর আগে ২০১৩ সালে। জিম্বাবুয়ে সফরে সেবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
দুই দলের ওয়ানডে পরিসংখ্যানে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৭৫বার মুখোমুখি হয়েছে, যেখানে ৪৭টি ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ। তবে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে বরাবরই শক্তিশালী। তাই সিরিজ জিততে হলে দলীয় পারফরম্যান্সের কোনও বিকল্প নেই। আর এজন্য সুন্দর একটি সকাল চান ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ‘জিম্বাবুয়েতে ২-৩টা সিরিজ খেলেছি, তবে ৬-৭ বছর আগে। সাড়ে ৯টায় ম্যাচ শুরু হবে, তাই বোলারদের শুরুতে সুবিধা হবে, বিশেষ করে প্রথম ঘণ্টায়। এটা চ্যালেঞ্জিং হবে যদি আগে ব্যাট করি। আগে ব্যাট করলে সাবধান থাকতে হবে। আগে বোলিং করলে এই এক ঘণ্টা কাজে লাগাতে হবে।’
পরিসংখ্যানে যতই এগিয়ে থাকুক বাংলাদেশ, তাতে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার কোনও সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম দেশে ফিরে এসেছেন। বাবা-মায়ের করোনা আক্রান্তের খবর শুনে বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশে ফেরেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। পাশাপাশি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে গোড়ালিতে চোট পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়েও শঙ্কা আছে। এদিকে আবার ভিসা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে যেতে না পারায় প্রথম ওয়ানডেতে রুবেল হোসেনকে পাওয়ার সুযোগও নেই। অন্যদিকে অধিনায়ক তামিমও পুরোপুরি ফিট নন। সব মিলিয়ে প্রথম ওয়ানডের আগে কঠিন পরিস্থিতির সামনে বাংলাদেশ দল।
তামিম অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবসময় পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলতে পারি এমন নয়। আর আমাদের পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে। মুশফিকের পরিস্থিতি দেখুন বা মোস্তাফিজের চোট, এগুলো নিয়ন্ত্রণে নেই। এজন্যই ১৬-১৭ জন রাখা হয় স্কোয়াডে। যারা স্কোয়াডে আছে সবাই যোগ্য।’
মুশফিকের পর মোস্তাফিজকেও না পেলে বাংলাদেশের একাদশ গঠন নিয়ে কিছুটা কৌশলী হতে হবে। দুজনই ওয়ানডে দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। মোস্তাফিজ শেষ পর্যন্ত না খেললে বোলিং আক্রমণে দেখা যেতে পারে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামকে। তাদের সঙ্গে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন থাকবেন। এদিকে লিটন দাস ওপেনিংয়ে খেললে হয়তো নুরুল হাসান সোহানের সুযোগও হতে পারে। তবে লিটন চার নম্বরে ব্যাটিং করলে তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে নাঈম শেখকে। মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন ও আফিফ হোসেন হয়তো মিডল অর্ডার সামলাবেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে তামিমের জন্য আরেকটি মাইলফলকের ম্যাচ। তামিমের অধীনে বিদেশের মাটিতে এখনও জেতেনি বাংলাদেশ। পূর্ণাঙ্গ অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কায় তার নেতৃত্বে দল হেরেছিল ৩-০ ব্যবধানে, নিউজিল্যান্ডে গিয়েও ফলাফল পরিবর্তন হয়নি, একই ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তামিমের এবার লক্ষ্য তিন ম্যাচ জিতে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট অর্জন।
সিরিজটি আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ হওয়াতে গুরুত্ব আরও বেশি। ৫০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দুই নম্বরে। জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে বাংলাদেশ ৮০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে যাবে। তামিমও সেটাই জানালেন, ‘ভালো শুরু করাই আমার কাছে মূল বিষয়। আমাদের সব সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। সুপার লিগ খেলবো। প্রত্যেক ম্যাচের আলাদা গুরুত্ব আছে। তিনটা ম্যাচেই আমরা সেরা দল খেলানোর চেষ্টা করবো।’
বার্তা বিভাগ প্রধান