বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শনিবার রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিককে জামিন দিয়েছে আদালত। শনিবার রাতে দৈনিক ইত্তেফাক ও ইনডেপেনডেন্ট টেলিভিশনের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে মি. হাসানকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ, কিন্তু রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিন দেয়। মি. হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাবারের মান নিয়ে একটি “মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” প্রতিবেদন করার মাধ্যমে হাসপাতালটির “মানহানি” করেছেন।
গতরাতে এই গ্রেপ্তারের ঘটনার পর আজ সকালের কিছু ছবি বিবিসির হাতে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে মি. হাসান হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন, তার হাতে হাতকড়া লাগানো। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষই মি. হাসানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছে।
আজই মি. হাসানকে আদালতে হাজির করা হবে বলেও পুলিশ জানাচ্ছে। মি. হাসানের পরিবার বলছে, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।
এদিকে এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে শনিবার রাতেই বিক্ষোভ করেছে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব।
কী হয়েছিল ঠাকুরগাঁওয়ে?
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বিবিসিকে বলেন, আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে শুক্রবার তিনজন সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। তানভীর হাসান তানু সেই মামলার প্রধান নম্বর আসামি। মি. হোসেন জানান, মি. হাসানকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি সেখানে মামলার খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। মি. হাসানের বড় ভাই মাহবুব আলম সোহাগ বিবিসিকে জানিয়েছেন, এ মাসের শুরুতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সরবারহ করা খাবারের মান নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
মি. হাসান জাগোনিউজ টুয়েন্টিফোর নামেও একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কাজ করেন, এবং উল্লেখিত খবরটি সেখানেই প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রকাশিত ওই খবরকে “মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং মানহানিকর” উল্লেখ করে ৯ই জুলাই ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বার্তা বিভাগ প্রধান