Home » লকডাউনের সপ্তম দিন : সিলেটে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুলিশের দায়িত্বপালন

লকডাউনের সপ্তম দিন : সিলেটে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পুলিশের দায়িত্বপালন

কঠোর লকডাউন ও মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের সপ্তম দিনে কঠোর অবস্থানে সিলেটের সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে সিলেটে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

বৃষ্টির মধ্যেই সিলেটের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সেই সাথে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সিলেট জেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে। লকডাউন আর বৃষ্টিতে অনেকটা বন্দি হয়ে পড়েছেন সিলেটের মানুষ। সেজন্য বুধবার সকালে সিলেটে সড়কগুলো মঙ্গলবারের তুলনায় বেশ ফাঁকা ছিল।

সিলেট নগরীর বিভিন্ন সড়কে আগের দিনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি ছিল কম, তবে রিকশা ছিল প্রচুর। সড়কগুলোতে দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এদিকে, সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে সাধারণ জনগণের উপস্থিতি খুবই কম থাকলেও পুলিশ সদস্যরা চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন। চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনের সময় বৃষ্টিতে ভিজেই পুলিশ সদস্যরা বাইরে বের হওয়া মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। কোনো কোনো চেকপোস্টে বৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায় না থাকায় খানিকটা দূরে সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়িয়েই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে তাদের। এছাড়াও যানবাহন ও মানুষ চলাচল নিয়ন্ত্রণে সিলেটের প্রবেশদ্বার দক্ষিণ সুরমা, বাইপাস সড়ক, কুমারগাঁও তেমুখী, শাহপরাণ গেইট, বিমানবন্দর সড়কসহ প্রধান সড়কগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হয়েছে। যদিও সময়ের সঙ্গে তল্লাশি বা টহলের সংখ্যাও কমেছে।

সিলেটের বিমানবন্দর সড়কে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে ৬-৮ জন পুলিশকে। ছাতা ধরে সড়কে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

বিমানবন্দর সড়কের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছেন কাইয়ুম নামের এক ট্রাফিক পুলিশ। তিনি বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টির মধ্যেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এটা পুলিশের চাকরি। আমরা বের হওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছি। যানবাহন নিয়ে যারা চলাচল করছেন তারা যৌক্তিক ও সন্তোষজনক কারণ না দেখাতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাস্তায় বের হওয়া মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা করছেন তারা।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষে একা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এটা একটা কঠিন কাজ। তবুও পুলিশ মাঠে কাজ করে যাচ্ছে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য। নিজেরা সচেতন হলেই কঠিন এই সময়ে বেঁচে থাকা সম্ভব। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দল লকডাউন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

জানা আছে, কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) কঠোর লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে ৯৬টি যানবাহনে মামলা, ১৪৩টি গাড়ি আটক এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ। এসএমপির ক্রাইম ও ট্রাফিক ডিভিশনের সাথে ডিবি পুলিশ এবং পুলিশ লাইন্স অফিসার ও ফোর্স যৌথভাবে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার দিনব্যাপী ৩২ টি চেকপোস্ট, সকল থানা- ফাঁড়ি-তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় ৫২টি টহল মোবাইল টিম অভিযান পরিচালনা করেছে।

অভিযানকালে লকডাউনের বিধি-নিষেধ অমান্য করায় সিএনজি অটোকিরশা ৩৪টি, মোটরসাইকেল ৪৩টি, প্রাইভেট কার ১৬টি ও অন্যান্য ৩ টি গাড়ির উপর মামলাসহ সর্বমোট ৯৬টি মামলা করা হয। এছাড়াও সিএনজি অটেরিকশা ৩৭ টি, মোটরসাইকেল ৫২ টি, প্রাইভেটকার ৬ টি ও অন্যান্য ৪৮টিসহ মোট ১৪৩ টি যানবাহন আটক করা হয়। পুলিশের দায়িত্বের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ অভিযানে ৫ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে লকডাউন বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে ৭৭ হাজার জরিমানা করা হয়।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *