রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ সোমবার সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. মাহফুজ রিভেঞ্জ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।মাহফুজ রিভেঞ্জ বলেন, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির বাকি সদস্যেরা হলেন উপপরিচালক (ঢাকা) দিনমনি শর্মা, সহকারী পরিচালক (ঢাকা) ছালেহ উদ্দিন আহমেদ, উপ-সহকারী পরিচালক (ঢাকা জোন-০১) মো. বজলুল রশিদ ও ওয়্যার হাউসের পরিদর্শন মণ্ডল।গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৩৪ মিনিটে ওয়্যারলেস গেটে তৈরি পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আড়ং ভবনের পাশে ৮৯ নম্বর বাড়িতে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা ইউএনবি। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। আশপাশের সাতটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’যদিও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন পর্যন্ত মোট চার জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। আজ সোমবার সকালে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিন জন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়েছেন। এর বাইরে আর কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।’ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. মাহফুজ রিভেঞ্জ সকালে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত তিন জন নিহত হওয়ার তথ্য রয়েছে। বাকি তথ্য পরে জানানো যাবে।’
বিকট শব্দে কেঁপে উঠে এলাকা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, মগবাজারে হঠাৎ করেই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বিশাল এলাকা। ‘রহস্যজনক’ ওই বিস্ফোরণে একটি বহুতল ভবনের একতলার ছাদ ও আশপাশের বহু ভবন ও রাস্তায় জ্যামে আটকেপড়া গাড়ির কাচ ধসে পড়েছে।কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ভবনের দেয়াল, ছাদ, জানালা ও রাস্তায় জ্যামে আটকেপড়া গাড়ির কাচ তুলার মতো ছড়িয়ে পড়ে। ভয় আর আতঙ্ক তাড়া করে আশপাশের মানুষকে। আচমকা এই বিস্ফোরণে হতভম্ব মানুষ যখন সম্বিত ফিরে পায় তখন দেখে আহত মানুষ আর ধ্বংসলীলা।
আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আদ-দ্বীন হাসপাতাল ও ঢাকা কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোপ ছোপ রক্তের দাগ আর টুকরো টুকরো কাচে ভরে গেছে পুরো এলাকা। কীভাবে, কোথা থেকে বিস্ফোরণের এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটল, তা নিশ্চিত হতে পারেনি প্রত্যক্ষদর্শীরা। শুধু বলতে পারছে, কেঁপে উঠেছিল ভবন আর আবাসস্থল।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, এসি অথবা বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করতে পারেননি ঠিক কী কারণে এত ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।স্থানীয়রা বলছে, এর আগে এত বড় বিস্ফোরণের ঘটনা তারা দেখেনি।
প্রতিনিধি