দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শফি আহমদ চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় কমিটি।
এতে তাঁকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। শুক্রবার (১৮ জুন) ওই নোটিশের জবাব দিয়েছেন শফি আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘জনতার চাপে’ তিনি নির্বাচন করছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শফি আহমদ চৌধুরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে চিঠির জবাবে তিন পাতার একটি চিঠি দিয়েছি। নির্বাচন কেন করছি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি- সবই বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি। আমি বিএনপির রাজনীতির একজন হিসেবে এই চিঠি দিয়েছি। এখন দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি নির্বাচন করছি, আমার নির্বাচনী এলাকার জনতার চাপে। চিঠিতেও এ বিষয়টি বলেছি। এটাই আমার জীবনের শেষ নির্বাচন।’
গত ১১ মার্চ করোনায় সংক্রমিত হয়ে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে এসে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়পত্র দাখিল করেন সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরী। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে তাঁকে চিঠি দিয়ে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
শফি আহমদ বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে এ আসনের বিএনপিদলীয় সাংসদ ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপিদলীয় প্রার্থী ছিলেন। ‘জনতার চাপে’ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি দল করি ঠিক আছে। কিন্তু নির্বাচন করছি এলাকাবাসীর স্বার্থে, জনগণের জন্য কিছু করার জন্য। এই আসনে ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে কিন্তু আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথম নির্বাচন করেছিলাম এবং জয়ী হয়েছিলাম। এরপর বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখন আমার অবসরে থাকার সময়। বয়স ৮৩ বছর। এটাই আমার শেষ নির্বাচন।’
শফি আহমদ আরও বলেন, ‘সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এখন দেখছি, শুরুটা যেভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হয়েছিল, শেষটাও স্বতন্ত্র হিসেবেই। আমার নিজের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। নির্বাচনী এলাকার মানুষের কল্যাণে সর্বশেষ পর্যায়ে কিছু কাজ করার ইচ্ছা আছে। এই ইচ্ছাতেই প্রার্থী হয়েছি। আমি আমার রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আছি। আমার সঙ্গে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সবাই আছেন। এটা ভালোবাসা থেকে হয়েছে।’
শফি আহমদকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ বলেন, এ বিষয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান