সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্টসহ নানা অবকাঠামোর উন্নয়ন চলছে গত কয়েক বছর ধরে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম। একটি প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই আরেকটির কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে এর সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন নগরবাসী। ‘আধুনিক-স্মার্ট নগর রূপকল্প’ বাস্তবায়নে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। নগরীর এক কিলোমিটার ভুগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণকাজ শেষ করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। তবে নগরবাসীর সেই পুরোনো ভোগান্তি জলাবদ্ধতা বদলে যাওয়া নগরীতেও একইভাবে রয়ে গেছে। প্রধান প্রধান সড়কের পাশে উঁচু ও বড় করে নির্মাণ করা ড্রেনগুলো বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশন করতে পারছে না। ফলে এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
সিসিক এলাকায় প্রায় এক হাজার একশ কিলোমিটার ড্রেনের মধ্যে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের পাশের ড্রেন হচ্ছে ৫৫০ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে যার প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে দুইশ ২০ কোটি টাকা। বাকি কাজ শেষ করতে আরও ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। চলতি জুনে এসব কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আগামী জুন পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে সম্প্রতি নির্মাণ করা ড্রেনও ভালোভাবে পানি নিস্কাশন করতে পারছে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, রাস্তা থেকে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে ড্রেনে পড়ার জন্য যে পথ রাখা হয়েছে, তা ছোট হওয়ায় পানি নিস্কাশনে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই যানবাহন চলাচলে প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার মোড়, সুবিদবাজার-মদিনা মার্কেট রাস্তা, শিবগঞ্জ-মিরের ময়দান সড়ক, উপশহরের বিভিন্ন রাস্তা, মেডিকেল রোড, মিরের ময়দান রোড, শাহী ঈদগাহ, কদমতলী-বাস টার্মিনাল রোডসহ কয়েকটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিনে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। অতিবৃষ্টি হওয়ায় হাঁটু পানি মাড়িয়ে সেসব রাস্তায় যানবাহন ও লোকজনকে চলতে দেখা গেছে। সবশেষ শুক্রবার রাতের বৃষ্টিতে মারাত্মক জলাবদ্ধতা দেখা দেয় ওইসব এলাকার রাস্তায়।
রাস্তা থেকে বৃষ্টি পানি ড্রেনে প্রবেশের পথ ছোট দাবি করে মদিনা মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী জাবেদ আহমদ বলেন, প্রতি বছর পাঠানটুলা-সুবিদবাজার এলাকার রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এবার রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়ন কাজ হওয়ায় আশা করা হচ্ছিল আর জলাবদ্ধতা হবে না। তবে এবার বর্ষা মৌসুমেও একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, পরিকল্পনা করে ড্রেন করা হয়েছে। রাস্তা থেকে ড্রেনে পানি নিস্কাশনের ছিদ্র বা ছোট পথ অনেক সময় আবর্জনায় আটকে যায়। এতে দ্রুত পানি দ্রুত নিস্কাশন হয় না। অতিবৃষ্টি হলে এমনিতে পানি নামতে সময় লাগে। আমরা চেষ্টা করব, ওই পথগুলো বড় করার। তিনি আরও বলেন, ৯০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে ড্রেনের উন্নয়নে। তাহলে সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান হবে।
সুত্র : সমকাল
বার্তা বিভাগ প্রধান