Home » ফরিদপুর থেকে মহাকাশ অবলোকন করা যাবে

ফরিদপুর থেকে মহাকাশ অবলোকন করা যাবে

কর্কট ক্রান্তি রেখা ও ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার সংযোগস্থল ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপনে মঙ্গলবার (১ জুন) একনেকে প্রকল্প পাস হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ভাঙ্গা থেকে মহাকাশ অবলোকন করা যাবে। এছাড়া মহাকাশ গবেষণার সুযোগও তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অংশ নেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করবে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৩ কোটি ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সম্পূর্ণ বাংলাদেশি অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, কর্কট ক্রান্তি রেখা ও ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার সংযোগ স্থলে মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য মহাকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করা; মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার প্রসারে তথা বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টিতে উৎসাহিতকরণ; শিক্ষাবান্ধব বিনোদনের মাধ্যমে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য মহাকাশ গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত কেন্দ্রে সাধারণ জনগণের জন্য থাকবে বিভিন্ন ধরনের মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়ার্কশপ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ। এছাড়া এখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রনমি বা অ্যাস্ট্রফিজিক্স অলিম্পায়াডে অংশগ্রহণকারীদের জন্য উপযোগী প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আয়োজনের সুযোগ থাকবে। গবেষকদের জন্য থাকবে মহাকাশ বিজ্ঞানে গবেষণার সুযোগ। এছাড়া কেন্দ্রটি একটি শিক্ষা সহায়ক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। যার সুবিধা পেতে শুধু বাংলাদেশি নয়, বিদেশি পর্যটকদেরও আগমন ঘটবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির উন্নয়ন হবে। জাতীয় জীবনের আর্থ-সামাজিক পরিসরে ইতিবাচক দিকে গতি সঞ্চার করবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সূচক। প্রসঙ্গত, পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে রাখা বিষুব রেখা, কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত চারটি দ্রাঘিমা রেখার সংযোগস্থল মোট ১২টি। তাত্ত্বিকভাবে বলা হয়ে থাকে, মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য এই স্থানগুলো আদর্শ। তবে এই ১২টি ছেদবিন্দুর ১০টিই অবস্থিত বিভিন্ন সাগর-মহাসাগরে। স্থলভাগের মাত্র দুইটি ছেদবিন্দুর একটি সাহারা মরুভূমিতে, অন্যটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবাল ২০১৯ সালে এ তথ্যটি আলোচনায় নিয়ে আসেন। শুধু তাই নয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে সেখানে ‘বঙ্গবন্ধু মানমন্দির’ স্থাপনের প্রস্তাবও করেন তিনি। সেই প্রস্তাবের সূত্র ধরেই মহাকাশ অবলোকন কেন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

যা থাকছে প্রকল্পে

একনেক সূত্রমতে প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ১০ একর জমি অধিগ্রহণ, ১২ সেট বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি/গবেষণা সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, ৩১ সেট প্রদর্শনীবস্তু/শিক্ষা উপকরণ সংগ্রহ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং ডিজিটাল উপকরণ যেমন- কম্পিউটার ও আনুষাঙ্গিক দ্রব্যাদি সংগ্রহ, আটজন জনবলের অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ; অবজারভেটরি টাওয়ার ও বেষ্টনী ভবনসহ যাবতীয় স্থাপনা নির্মাণ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *