সিলেটের এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় মানব পাচার ও মুক্তিপন আদায় সংক্রান্তে ০৪(চার) জন আসামী গ্রেফতার করা হয়। অনুমান ০৪ বছর পূর্বে ভিকটিম (১৬), সাং-দিগলিয়া পশ্চিমপাড়া,থানা-অভয়নগর, জেলা-যশোর, বর্তমান সাং- ঘাসিটুলা, বাসা নং-১২, তাহির মিয়ার গলি, থানা- কোতোয়ালী, জেলা-সিলেট নানীর বাড়ির প্রতিবেশী পান্না বেগম (৪০) কৌশলে তাকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে যশোর থেকে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যায়। ঐখানে পতিতাবৃত্তি করার জন্য তাকে কৌশলে ভারতীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর থেকে একটানা দুই বছর সে ভারতের চেন্নাইয়ে বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তি করে । ঐখানে থাকা অবস্থায় বিবাদীনি রেবা বেগম @ সুমি মীম (৩০) এর সহিত তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে বছর দুই আগে ভারতের এক লোকের সহায়তায় ভিকটিম চেন্নাই থেকে পালিয়ে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে আসে। রেবা বেগম @ সুমি মীম (৩০) সহিত ভিকটিমের ঘনিষ্ট সর্ম্পক থাকায় সে দেশে এসে সরল বিশ্বাসে তার সহিত তার গ্রামের বাড়ি চলে যায়। রেবা বেগম সুমি মীম (৩০) ভিকটিমকে আশ্বস্থ করে যে, তার গ্রামের বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিবে। কিন্তুরেবা বেগম @ সুমি @ মীম (৩০) ভিকটিমকে কৌশলে তার গ্রামের বাড়ি থেকে সিলেটের বাদামবাগিচার একটি বাসায় নিয়ে আসে। ঐ বাসায় প্রথম কয়েকদিন ভালোভাবে চললেও পরবর্তীতে সে ভিকটিমকে নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য করে। ভিকটিম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ০৮/০২/২০২১ইং তারিখ রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় বিবাদীনির বাসা লিচুবাগান হতে কৌশলে পালিয়ে হাউজিং এষ্টেট এলাকায় আসে। ঐখানে সিএনজি অটোরিক্সা চালক রুবেল (২৯) এর নিকট সহায়তা চাইলে সে তাকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে রাখে এবং ঐখান থেকে অন্য এক সিএজি চালক মোঃ মামুন (২৬) এর সহায়তায় ভিকটিম বর্তমান ঠিকানার ফরহাদ আহমদ (২৬) এর বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করে। এরই জের ধরে গত ২০/০৫/২০২১ইং তারিখ রাত অনুমান ০৮.৫০ ঘটিকার সময় জোর পূর্বক ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে আশ্রয়দাতা ফরহাদ আহমদ কে অপহরণ করে একটি সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ি যোগে বাদামবাগিচা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায় এবং ফরহাদ আহমদ এর নিকট ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা মুক্তিপন দাবী করে। তার স্ত্রী’র ৬,০০০/- টাকা যোগাড় করে সিএনজি ড্রাইভার আনোয়ারের মাধ্যমে উক্ত টাকা প্রদানের জন্য ৫নং বিবাদীর মিশু আহমদ (৩৩), নিকট পাঠায়। একপর্যায়ে তাকে বাধ্য হয়ে অবশিষ্ট ৪৪,০০০/- টাকা পরে দিবে বলে বিবাদীদের বললে তারা ফরহাদ আহমদ এর সমস্ত কথা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রেখে তাকে ছেড়ে দেয়। ১নং বিবাদীনি রেবা বেগম সুমি @ মীম (৩০) হুকুমে সমূহ বিবাদীরা একই উদ্দেশ্যে তাকে অপহরণ করতঃ মারধর করে সাধারণ জখম করা সহ মুক্তিপন আদায় ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। উভয়ের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১। রেবা বেগম সুমি মীম (৩০), স্বামী-শামীম আহমদ, সাং-কাদিরপুর, থানা-দিরাই, জেলা-সুনামগঞ্জ, বর্তমান সাং-লিচুবাগান (আলী ভবনের সামনের বাসা), থানা-এয়ারপোর্ট, জেলা-সিলেট, ২। মোঃ শাহেদ আহমদ (৩৩), পিতা-মোঃ সেলিম মিয়া, সাং-বাসা নং-৬৩, রোড নং-০১, বাদামবাগিচা, থানা-এয়ারপোর্ট, জেলা-সিলেট, ৩। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), পিতা-কালা মিয়া, সাং-মাছিমপুর, থানা-দোয়ারাবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ, বর্তমানে সাং-প্রভাতী-৩৫, পূর্ব পীরমহল্লা, থানা-এয়ারপোর্ট, জেলা-সিলেট, ৪। ইমন আহমদ (৩২), পিতা-মৃত রফিক মিয়া, সাং-বন্ধন-বি/২৩, খাসদবীর, বর্তমানে সাং-লিচুবাগান, বাসা নং-৬২, থানা-এয়ারপোর্ট, জেলা-সিলেট। বিবাদীদের আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসেন। উপরোক্ত বিষয়ে ভিকটিম খাদিজা আক্তার ও ফরহাদ আহমদ বাদী হয়ে পৃথকভাবে দুইটি এজাহার দায়ের করেন। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের কে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় মানব পাচার চার জন গ্রেফতার
