করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করায় তেলের চাহিদা কমবে এটা ধরে নিয়েই ইন্ডিয়ান অয়েল ও বাকি তিন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা চলতি মে মাসে সৌদি আরব থেকে তেলের আমদানি এক-তৃতীয়াংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে করোনায় দেশটিতে দেখা তীব্র অক্সিজেনের সংকটে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যখন লিকুইড মেডিকেল অক্সিজেন (এলএমও) সরবরাহ করছে তখন আগের সিদ্ধান্ত নতুন করে ভাবতে হচ্ছে ভারতকে।
ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর, ভারত সরকার এই জন্যই হয়তো আগামী জুন মাসে সৌদি আরবের কাছ থেকে স্বাভাবিক পরিমাণে তেল কেনার অর্ডার দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, দেশটির তেলমন্ত্রী একাধিকবার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ভারতের তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান গত শুক্রবার সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এক টুইটে বলেছেন, তাদের সরবরাহ করা লিকুইড মেডিকেল অক্সিজেন (এলএমও) ভারতকে করোনা সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছে।
ধারাবাহিক বেশ কয়েকটি টুইটে ভারতীয় তেলমন্ত্রী সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের আগামী ছয় মাস এলএমও পাঠানোর নিশ্চয়তাকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
শুক্রবার ভারতের তেলমন্ত্রী আরও জানান, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এলএমও সরবরাহ নিয়ে। তিনি বলেন, ভারতে এলএমও আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে গত সপ্তাহে সৌদি আরব, আমিরাত ও কাতারের তেলমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরামকোর কাছ থেকে প্রতি মাসে ১ কোটি ৫০ লাখ ব্যারেল তেল ক্রয় করে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় তেল শোধনাগার। তেল আমদানি ও ভোক্তার নিরিখে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত ৮০ শতাংশ কিনে মধ্যপ্রাচ্য থেকে।
এই বছরের শুরুতে রিয়াদ ও নয়াদিল্লির সম্পর্কে কিছুমাত্রায় টানাপড়েন দেখা দেয়। তেলের মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগে ভারত সৌদি আরবের কাছ থেকে তেলের আমদানি কমিয়ে দেয়। ভারত তখন মধ্যপ্রাচ্যের ওপর তেল-নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নেয়। মে মাসে সৌদি তেল কেনা কমানো হয় এক-তৃতীয়াংশ।
আসলে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ওপর তেলের নির্ভরতা কমিয়ে ভারত পশ্চিম আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, গায়ানার মতো দেশ থেকে আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে ভারতীয় তেলশিল্প সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, লিকুইড মেডিকেল অক্সিজেন ও ক্রাইয়োজেনিক ট্যাংক সরবরাহ করার পর কেন্দ্রীয় তেল মন্ত্রণালয় সৌদি আরব থেকে তেল আমদানি কমানোর কোনো নির্দেশ দেয়নি।
বার্তা বিভাগ প্রধান