Home » ৩০ বাংলাদেশি চালাবেন বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট

৩০ বাংলাদেশি চালাবেন বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর

মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ তার কক্ষপথে পৌঁছে গেছে। এবার এই স্যাটেলাইট থেকে তথ্য-উপাত্ত আদান প্রদানের পালা। শুরুতে বিদেশিদের তত্ত্বাবধানে হলেও এই স্যাটেলাইটটির নিয়ন্ত্রণ থাকছেন দেশের ৩০ জন তরুণ।  এর মধ্যে ১৮ জন থাকবেন গাজীপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপিত দুই গ্রাউন্ড স্টেশনের দায়িত্বে আর ১২ জন থাকবেন গ্রাউন্ড স্টেশন দুটির পুরকৌশল ও প্রকৌশলের দায়িত্বে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নিয়োগের পরে বিদেশে উচ্চ প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ করানো হয়েছে। এখনও বিদেশি প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে তারা কাজ করছেন। স্যাটেলাইটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থ্যালেস অ্যালেনিয়ার বিদেশি প্রশিক্ষকরা আগামী ৩ বছর এই তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলবেন। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ৩ বছর লাগবে না। তার আগেই পুরোপুরি যোগ্য এবং দক্ষ হয়ে উঠবেন এই ৩০ জন মেধাবী তরুণ। তারাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেবেন দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১–এর।

সংশ্লিষ্টদের আশা,এর ফলে দেশের দুই গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে বিদেশিদের প্রয়োজন হবে না। দেশের তরুণরা তাদের সক্ষমতা প্রমাণ করেই স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ করবে। জানা গেছে, এই ৩০ জনের দলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও রয়েছেন। জানতে চাইলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, অসাধারণ কাজ করছে আমাদের ছেলেরা। আমি তাদের কাজে মুগ্ধ। অভূতপূর্ব কাজ করছে তারা। মন্ত্রী গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওখানে আমি গিয়েছি, ছেলেদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাদের সক্ষমতার কথা আমাকে জানিয়েছে। গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনে ১৮ জন চৌকস তরুণ কাজ করছে উল্লেখ করে বলেন, তারা বিভিন্ন ডিসিপ্লিন থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। আমি যতদূর জানতে পেরেছি তাদের মধ্যে ৪-৫ জন অ্যারোস্পেস বিষয়ে পড়াশোনা করা। এছাড়া রয়েছে তড়িৎ কৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করা তরুণরা।
মন্ত্রী আরও বলেন, ওই তরুণদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন স্যাটেলাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া থেকে আগত তিনজন প্রশিক্ষক। প্রশিক্ষরা আমাকে বলেছেন, আমাদের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি। মনে হয় অনেক আগেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। কারণ, হিসেবে প্রশিক্ষকরা উল্লেখ করেন, তরুণরা খুব ভালোভাবে শিখছে। ওরা এতো দ্রুত সবকিছু আয়ত্বে নিয়ে নিচ্ছে যে কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হয়ে যাবে। মন্ত্রী আরও বলেন, বেতবুনিয়াতেও আমাদের গ্রাউন্ড স্টেশন আছে। মন্ত্রীর আশা, স্যাটেলাইটে এই তরুণদের ভালো করতে দেখলে আগামীতে অন্য তরুণরা উৎসাহিত হবে এ পেশায় আসতে। এ বিষয়ে পড়াশোনার হারও বেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, গ্রাউন্ড স্টেশনে আমাদের ছেলেরা ভালো করছে। চূড়ান্ত পর্বে (স্যাটেলাইট অরবিটাল স্লটে সেট হওয়ার পরে সংকেত আদান প্রদানের সময়) গিয়ে ছেলেরা তাদের দক্ষতা প্রমাণে সমর্থ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে এসব তরুণদের নিয়োগের জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এসব তরুণকে বাছাই করা হয়। তাদের যোগ্য করে তুলতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়ার কার্যালয়ে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে তারা স্যাটেলাইট পরিচালনা, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, সিগন্যালিং, পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা গ্রাউন্ড স্টেশনে  যোগদান করেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *