করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাবু গোটাদেশ। বাজারে ভ্যাকসিন চলে আসলেও কাটছে না উদ্বেগ। মিলছে না সংক্রমণের দাপট থেকে মুক্তি। এই অবস্থায় দেশের মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্র ও রাজধানী দিল্লির। দিন যত যাচ্ছে ততই এই দুই রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের দাপট।
এই অবস্থায় এবার নাইট কার্ফু, লকডাউনের পর করোনার শৃঙ্খল ভাঙতে বাইরের রাজ্য থেকে আগত যাত্রীদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করল দিল্লি সরকার। সংক্রমণ রুখতে এই বিষয়ে দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে যে, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা সহ অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে আগত যাত্রীদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক।
তবে নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজধানীতে আগত কোনও যাত্রীর যদি করোনার সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়া থাকে এবং সঙ্গে কোভিড-নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকে তাহলে ১৪ দিন নয়, সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। একই নিয়ম ধার্য থাকবে ৭২ ঘন্টা আগে আরটি-পিসিআর টেস্ট করা যাত্রীদের জন্যও।
জানা গিয়েছে, ভিনরাজ্যের যেসমস্ত যাত্রীরা এর আওতায় পড়বেন তাঁদের জন্য হোম আইসোলেশনের ব্যবস্থা না থাকলে আলাদা কোনও জায়গায় একসপ্তাহ থাকতে পারবেন।এছাড়াও ভিনরাজ্য থেকে যারা এসে সরকারী রিসর্ট , হোটেল বা অন্যকোনও জায়গায় থাকবেন ওই ১৪ দিন তাঁদের যাবতীয় কোভিড প্রোটোকল মেনে চলা বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, ওই কয়দিন তাঁদের স্বাস্থ্য সমস্ত যাবতীয় তথ্য পর্যবেক্ষণ করা হবে।
উল্লেখ্য, দেশে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী করোনার গতি। এই অবস্থায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে অঅন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায়। এই অবস্থায় করোনার নয়া স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে দিল্ল সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৪ লক্ষ ১২ হাজার ২৬২ জন। যা পূর্বের সমস্ত রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে। একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ জনের। গত শনিবার ৪ লক্ষ ১ হাজার ৯৯৩ জন আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী রেকর্ড গড়েছিল। তারপরে সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমতে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার শনিবারে রেকর্ডও ভেঙে দিল।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছে ৩ লক্ষ ২৯ হাজার ১১৩ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট সুস্থ হয়েছে ১ কোটি ৭২ লক্ষ ৮০ হাজার ৮৪৪ জন। সুতরাং মোট সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৯৮ জন। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ জনের।এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২৩ হাজার ১ শত ৬৮ জন।
আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ৫৭ হাজার ৬৪০ জন। তারপরেই রয়েছে কর্ণাটক। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ৫০ হাজার ১১২ হন। কেরালায় আক্রান্ত হয়েছে ৪১ হাজার ৯৫৩ জন। উত্তরপ্রদেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ১১১ জন। তারপরেই আছে তামিলনাড়ু যেখানে আক্রান্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৩১০ জন। এই পাঁচটি রাজ্য থেকে প্রায় ৪৯.৫২ শতাংশ নতুন মামলার খবর পাওয়া গেছে, তারমধ্যে মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত হয়েছে ১৩.৯৮ শতাংশ।
নির্বাহী সম্পাদক