অনলাইন ডেস্ক: ভারতে ‘সতীত্বের পরীক্ষা’ নামে একটা সামাজিক ব্যাধি রয়েছে। যেখানে নতুন বউদের বিয়ের পর হোটেলে থেকে সতীত্ব পরীক্ষা দিতে হয়। বৌ ‘সতী’ কি না, তা জানতে হবে প্রথম রাতেই! তাই মোড়লই হোটেলের ঘর দেবেন। বিছানার সাদা চাদরটাও।
সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে সারা রাত বসে থাকবেন বন্ধ দরজার ও-পারে। তার আগে ঘরে এক নারীকে পাঠাবেন মোড়ল। তিনি আপাদমস্তক দেখে আসবেন পাত্রীকে কোথাও ‘খুঁত’ নেই তো! হাতে একগাছি চুড়িও পরে থাকতে পারবেন না নববধূ।
আর সকালে বর বিছানা ছেড়ে এসে দেখাবেন চাদরের ‘দাগ’। ব্যস্, বিয়ে মঞ্জুর। দশ কিংবা বিশ হাজারে ‘খুশি’ পঞ্চায়েতও। বিয়ের আগে পর্যন্ত মেয়েদের এভাবেই ‘অক্ষতযোনি’ করে রাখতে চাইছে কঞ্জরভাট গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত। কিন্তু এই নিয়মে আর বাঁধা থাকতে চায় না বিবেক-ঐশ্বর্য। তাইতো বিয়ের কার্ডে ছাপিয়েছিলেন বিবেক তমাইচীকর। পুরোটা মরাঠিতে। ইংরেজি বাক্য একটাই— ‘স্টপ দ্য ভি রিচুয়াল’!
ব্যাপার কী? পুরোটা বোঝা গেল ১২ মে, বিয়ের দিনে। পঞ্চায়েতের বলে দেওয়া হোটেলে নয়। পুলিশি পাহারায় বিয়ে করে সোজা বাড়িতেই ফিরলেন পুণের বছর আঠাশের যুবক। সাদা চাদরে ‘সতীত্বের পরীক্ষা’ (ভার্জিনিটি রিচুয়াল) দিতে হল না নববধূ ঐশ্বর্যকেও। তবু এ ভাবেই সংসার পাতলেন।
বিয়ের কার্ড ছাপিয়েই তাই রাজ্য মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিবেক। সেখান থেকে ফোন যায় পুণের পুলিশ কমিশনারের কাছে। বিয়ের আসর ছেয়ে যায় বাউন্সার আর পুলিশে। এর আগে আত্মীয়-পড়শির বিয়েতে এই প্রথা ভাঙতে গিয়ে বেশ কয়েক বার মারও খেতে হয়েছে বিদ্রোহী ছেলেমেয়েগুলোকে। পাশে দাঁড়ায় ‘মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি’।
নবদম্পতিও মানছেন, লড়াই বাকি। ‘পথ চলা সবে শুরু,’ হোয়াটসঅ্যাপ করার দু’দিন পরে বললেন ঐশ্বর্য। বিয়ের পর থেকেই তাঁরা জুটিতে শহর ছাড়া।
নির্বাহী সম্পাদক