অনলাইন ডেস্ক: রাশিয়া কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ওবামা প্রশাসন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর নির্বাচনি টিমের উপর নজরদারি চালিয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁর৷ এফবিআই-এর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প৷ ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার মদত নিয়েছিলেন কিনা এবং নিয়ে থাকলে এখনো পর্যন্ত সত্য গোপন করে আসছেন কিনা, তা নিয়ে তদন্তের এক বছর পূর্ণ হয়েছে৷ ট্রাম্প বরাবর প্রকাশ্যে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে চলেছেন৷ উলটে সিআইএ’র প্রাক্তন প্রধান রবার্ট মালারের এই তদন্তকে অ্যামেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ‘উইচ হান্ট’ বলে আসছেন৷ এবার তিনি গর্জে উঠলেন মার্কিন অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে৷ এফবিআই নির্বাচনি প্রচারের সময়ে তাঁর টিমে চর পাঠিয়েছিল অথবা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্দেশে ‘রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি’ করতে গুপ্তচরবৃত্তি করেছিল – এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিনি বিচার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন৷ রবিবার এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, এই অভিযোগ ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির থেকেও বড় ঘটনা হিসেবে গণ্য হতে পারে৷
মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন৷ তাতে দাবি করা হয়েছিল যে, ২০১৬ সালের নির্বাচনি প্রচারের সময় এফবিআই ব্রিটেনে কর্মরত এক মার্কিন অধ্যাপককে আলাদা করে ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের সাক্ষাৎকার নিতে পাঠিয়েছিল৷ ট্রাম্প টিমের কার্টার পেজ ও জর্জ পাপাডোপুলোস রাশিয়ার সঙ্গে অবৈধ যোগাযোগ রেখে চলেছেন কিনা, সেই অধ্যাপক নাকি এ বিষয়ে খবর জানার চেষ্টা করেছিলেন৷
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু রাশিয়া নয়, পারস্য উপসাগরীয় কিছু দেশও ২০১৬ সালের নির্বাচনের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়েছিল৷ ট্রাম্প টিমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে৷
ট্রাম্পের অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় ইনস্পেকটর জেনারেলের নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷ সেইসঙ্গে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তার ভিত্তিতে ‘ফিসা’ নামের সমন জারি করা হয়, তা-ও নতুন করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ রিপাবলিকান দলের অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করে ট্রাম্প টিমের কার্টার পেজ-এর উপর নজরদারি চালানো হয়েছিল৷
মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের সমর্থকরা গুপ্তচরের পরিচয় জানতে চাইলেও এফবিআই জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে এমন কোনো ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব নয়৷ বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল রিপাবলিকানদের এমন প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করেছে৷ মার্কিন গুপ্তচরদের পরিচয় জানার চেষ্টাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বেআইনি হিসেবে গণ্য করছে তারা৷ ট্রাম্প নিজে তদন্তের চাপের মুখে এমন আচরণ করছেন বলে অভিযোগ করছেন ডেমোক্র্যাট দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য৷ তাঁদেরই একজন জোয়াকিন কাস্ত্রো৷ তিনি এক টুইট বার্তায় তদন্তে বাধা সৃষ্টি না করার ডাক দেন৷
এদিকে ‘স্পেশাল কাউন্সেল’ রবার্ট মালার আগামী ১লা সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্তের একটা অংশ শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি৷ তবে ট্রাম্প জেরার মুখে বসতে প্রস্তুত কিনা, তার উপর এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ভর করতে পারে৷ ট্রাম্প আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছেন কিনা, সে বিষয়ে মালার এই সময়কালেই নিজের বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন জুলিয়ানি৷ তা না হলে নভেম্বর মাসে মধ্যবর্তী নির্বাচনের উপর এই তদন্তের প্রভাব পড়তে পারে৷ মালার-এর মুখপাত্র অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি৷ -ডয়েচেভেলে
নির্বাহী সম্পাদক