গোটা পথ লাইনে থেকে তীরে এসে তরী ডুবাচ্ছেন তামিম ইকবাল। তা নয়তো কী! দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও যন্ত্রণার আগুনে পুড়তে হচ্ছে এই ওপেনারকে। আগের টেস্টেও দুটি সম্ভাবনার ‘মৃত্যু’ হয়েছিল। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে আরেকটু কাছে গিয়ে থামতে হলো তামিমকে। আউট হয়েছেন ৯২ রানে।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির দিকে ছুটছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। লাঞ্চের পর কিছুটা লাগাম টানলেও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। কিন্তু প্রবীণ জয়াবিক্রমার বলে ঘায়েল তিনি। স্লিপে লাহিরু থিরিমানের হাতে যখন ধরা পড়েন, সেঞ্চুরি থেকে ছিলেন মাত্র ৮ রান দূরে। চলতি সিরিজেন তিন ইনিংসেই সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপে পুড়তে হলো তাকে। ১৫০ বলের ইনিংসটি তামিম সাজান ১২ বাউন্ডারিতে।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে দেয়নি বৃষ্টি। পঞ্চম দিনে বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন। এরপর আর ম্যাচ শুরু না হওয়ায় ব্যাটিংয়ের সুযোগ মেলেনি তামিমের। প্রথম ইনিংসে আবার গিয়েছিলেন আরও কাছে। দারুণ এক ইনিংস শেষ হয়েছিল তামিমের ৯০ রানে। ওই দুই ইনিংসের জ্বালা জুড়ানোর সুযোগ এবার পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কষ্ট আরও বেড়েছে ৯২ রানে আউট হয়ে।
অথচ তামিম ইকবালের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২৫ ওভার পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বোলারদের শাসন করেছে সফরকারীরা। কিন্তু লাঞ্চে যাওয়ার আগের ওভারে সাইফ ও এক বল আগে শান্ত আউট হয়ে যাওয়ায় স্বস্তির সেশন চরম অস্বস্তিতে শেষ হলো। লাঞ্চ বিরতির আগে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৯৯। ৪৯৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করা শ্রীলঙ্কা থেকে পিছিয়ে ৩৯৪ রানে। তামিম অপরাজিত ছিলেন ৭০ রানে।
উইকেট অক্ষত রেখে ভালো সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে প্রথম সেশন শেষ করার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। ৯৮ রানেও ছিল উইকেটশূন্য। কিন্তু স্কোরে ১ রান যোগ করতেই বাংলাদেশ হারালো ২ উইকেট। ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে চলতি সিরিজে সাইফ প্রথমবার যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কের ঘরে। আগ্রাসী তামিমকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দাঁড়িয়ে যাওয়া ইনিংসটি টেনে নিতে পারেননি এই ওপেনার। ২৫ রানে প্রবীণ জয়াবিক্রমার বলে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। বাঁহাতি স্পিনারের বাঁক নেওয়া বল তার ব্যাট ছুঁয়ে গেলে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ক্যাচ নিতে ভুল করেননি।
সাইফের বিদায়ের ধাক্কা কাটতে না কাটতেই আবার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার হতাশ করেন শান্ত। প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ানের বিদায়টা আরও কষ্টদায়ক। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগের বলেই তিনি আউট! রমেশ মেন্ডিসের বাঁকানো বল তার ব্যাটে লেগে গেলে স্লিপে ক্যাচ নেন লাহিরু থিরিমানে। তখনও রানের খাতা খোলা হয়নি শান্তর।
শ্রীলঙ্কা: প্রথম ইনিংসে ১৫৯.২ ওভারে ৪৯৩/৭ (ডিক্লে.) (লাহিরু থিরিমানে ১৪০, দিমুথ করুণারত্নে ১১৮, ওশাডা ফার্নান্ডো ৮১, নিরোশান ডিকবেলা ৭৭*, রমেশ মেন্ডিস ৩৩, পাথুম নিসানকা ৩০, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ৫, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২; তাসকিন আহমেদ ৩৪.২-৭-১২৭-৪, তাইজুল ইসলাম ৩৮-৭-৮৩-১, মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৬-৭-১১৮-১, শরিফুল ইসলাম ২৯-৬-৯১-১)।
বার্তা বিভাগ প্রধান