জে,জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
শুধু প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণ তরুণী নয়, শিশু কিশোরের মাঝেও নানা ধরনের বিচিত্র শখ জাগতে পারে যা স্বাভাবিক। তেমনি এক ঘটনা ঘটে চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে। যা থানা পুলিশের বিচক্ষতায় ২৪ ঘন্টায় কিশোরীকে উদ্ধার করে তাক লাগালেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যেভাবে:
গত ২৬ এপ্রিল তারিখ বিকাল সাড়ে ৫টায় নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন জোলাপাড়ার ফিরোজশাহ হাসান ভবন (৮ম তলা) হতে মিফতাউল জান্নাত মিথিলা (১২) নামক এক কিশোরী নিখোঁজ হন। জানা যায়, সে তার মা ও বড় ভাই এর সাথে ঝগড়া করেন। পরে কাউকে কিছু না বলে চলে যায়। কিশোরীর পরিবার কিশোরী ঘর হতে বাহির হয়ে যাওয়ার বিষয়টি পাহাড়তলী থানা পুলিশকে অবগত করে। পাহাড়তলী থানা পুলিশ দ্রুত কিশোরীকে উদ্ধারের লক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসহ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে উদ্ধারের অভিযান শুরু করে।
ঘটনার বিবরণে আরও জানা যায়:
নিজ বাসা হতে কিশোরী মিথিলা (১২) কাউকে কিছু না বলে গেলো কোথায়? কিশোরীর পরিবারের কাউকে কিছু না বলিয়া বাসা হতে বের হয়ে সে খুলশী বাস্কেট সুপারমলের সামনে গিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। এ অবস্থায় দেখতে পেয়ে, রাস্তা দিয়ে যাওয়া গার্মেন্টস কর্মী ইয়াছমিন (৩৫) তার সাথে কথাবার্তা বাসায় নিয়ে যান। শান্তনা দেন। খাবার দেন।
কিশোরী উদ্ধার হয় যেভাবে:
পাহাড়তলী থানা পুলিশ নিখোঁজ কিশোরীকে উদ্ধারের তৎপর শুরু করে। কিশোরীর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারসহ বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে থাকে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পাহাড়তলী থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুলশী থানাধীন ওয়ারলেস ২নং কলোনী আরাফাত এর ভাড়া ঘরে পৌঁছে যায়।
ওখানে গিয়ে গার্মেন্টস কর্মী ইয়াছমিন (৩৫) এর হেফাজত হতে সুস্থ অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। কিশোরী মিথিলা’কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, তার বাবা মা ও বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তার স্বপ্ন সে নায়িকা হবে কিন্তু বাবা মা ও বড় ভাই তাকে নায়িকা হতে দিবে না মনে হওয়ায়, সে বাসা হতে কাউকে কিছু না বলে চলে আসে!
পাহাড়তলি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান ইমাম জানান, ‘নায়িকা হবার স্বপ্ন পুরণ করতে বাসা থেকে বের হয়ে যায় অবুঝ মেয়েটি। হয়তো টিভি দেখতে দেখতে তার ইচ্ছা হয় সে নায়িকা হবে। এই করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের ছেলেমেয়েরা বাস্তবতা থেকে দুরে সরে যাচ্ছে।’
ওসি আরও অনুরোধ করেন, ‘অভিভাবকদের ছেলেমেয়েদের প্রতি আরো সদয় হয়ে কাছাকাছি থাকা উচিত। ছেলেমেয়েরা বাসায় থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কি করে ফেলে হয়তো নিজেরাও জানে না। তাই সবার সজাগ ও দৃষ্টি রাখা উচিত ছেলেমেয়েদের প্রতি।’
নির্বাহী সম্পাদক