নয়াদিল্লি : দেশজুড়ে চলছে মারণ করোনার তান্ডব। অদৃশ্য ব্যাধির দ্বিতীয় ধাক্কায় রীতিমতো কাবু গোটাদেশ। এই অবস্থায় গত কয়েক দিন ধরে আরও প্রকট হয়ে ফুটে উঠেছে অতিমারী পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের অক্সিজেন সমস্যা, মেডিকেল সরঞ্জামের ঘাটতি, করোনা সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধের অপ্রতুলতা।
আর এই অবস্থায় দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ফের উচ্চপর্যায়ের ভার্চুয়ালি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মঙ্গলবার রাতের এই ভার্চুয়ালি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের সমস্ত উচ্চপদস্থ আমলা আধিকারিকরা।
এদিনের বৈঠকে দেশের অক্সিজেন সমস্যা, ওষুধ, মেডিকেল সরঞ্জামের বিষয়ে সমস্ত তথ্যের রিপোর্ট চেয়ে পাঠান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যাতে আরও উন্নত করা যায় সেই ব্যাপারেও কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অক্সিজেনের যোগান এবং ঘাটতি নিয়েও মোদীকে রিপোর্ট দেন ওই আধিকারিকরা।
সরকারি সূত্রে খবর, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সারাদেশে ২০২০ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ৫৭০০ এমটি অক্সিজেন উৎপাদিত হয়েছে। চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯২২ এমটি। এছাড়াও আগামী দিনে এই অক্সিজেন উৎপাদনের পরিমাণ ৯২৫০ এমটি অতিক্রম করবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়াও দেশজুড়ে আইসিইউ বেডের জোগান অব্যাহত রাখা, অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয়৷ ওষুধপত্র জরুরি ভিত্তিতে রাজ্যগুলিকে পাঠানোর জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়েও এদিন প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, অতিমারীর এই পরিস্থিতিতে কোভিড প্রোটোকল মেনে কী কী করা হচ্ছে সেই বিষয়েও বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করা হয় এদিন।
অন্যদিকে দেশের করোনা সংক্রমণ জনিত মামলায় কেন্দ্রকে আবার কড়া বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার অক্সিজেন সঙ্কট ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন মনে করলে এবার আদালত হস্তক্ষেপ করবে।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, এটা জাতীয় বিপর্যয়। এখন রাজনীতি ও বিতর্কের সময় এটা নয়। এখন সকলের উচিত দেশের পাশে দাঁড়ানো। পাশাপাশি, করোনা ভ্যাকসিনের আলাদা আলাদা দাম কেন, তা নিয়েও মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট যে মন্তব্য করেছে তাতে বলা হয়েছে, “এখন জাতীয় বিপর্যয়, আদালত নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারে না। মানুষের জীবন বাঁচানোই আদালতের কাছে এখন অগ্রাধিকার। আদালত যখনই মনে করবে, তখনই হস্তক্ষেপ করবে।” সর্বোচ্চ আদালত এ-ও মনে করেছে, “হাইকোর্টগুলিরও এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”

নির্বাহী সম্পাদক