বিশ্বের অনেক দেশেই নারী নির্যাতনের খবর হরহামেশাই শোনা যায়। তবে জার্মানিতে শোনা গেল ভিন্ন কথা। দেশটিতে পুরুষের বিরুদ্ধে নির্যাতন সংক্রান্ত একটি হেল্পলাইন খুলতেই ফোন কলের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) ডয়েচে ভেলের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া ও বাভারিয়া রাজ্যে এই হেল্পলাইন খোলা হয়। গত এক বছরে সেখানে ১ হাজার ৮০০টিরও বেশি ফোনকল আসে। এই অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষ হেল্পলাইন খোলা রাখার সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জার্মান কর্মকর্তাদের দাবি, এই হেল্পলাইন সামাজিক সহযোগিতা ব্যবস্থায় যে ঘাটতি ছিল, তা পূরণ করছে। সম্প্রতি জার্মানির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যও পুরুষ নির্যাতন হেল্পলাইন চালু করতে চলেছে।
ওই রাজ্যের সামাজিক ন্যায়বিচার মন্ত্রী জানিয়েছেন, পুরুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনো ট্যাবুই রয়ে গেছে। এটি তাদের জন্য লজ্জার বিষয় বলে মনে করা হয়। তবে যে কোনো ধরনের সহিংসতাই জনসমক্ষে আনা উচিত।
নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার সমানাধিকার মন্ত্রী বলেছেন, এর মাধ্যমে পুরুষরা নির্যাতিত হলেও ভয়-লজ্জা দূরে সরিয়ে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তার মতে, নারী নির্যাতনের মতো পুরুষ নির্যাতন নিয়েও খোলাখুলি কথা বলা দরকার।
পুরুষ নির্যাতনের হেল্পলাইন চালু হওয়ার পর গত এক বছরে ১ হাজার ৮২৫টি ফোনকল এসেছে। প্রতিদিন কল এসেছে গড়ে নয়টি। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ ফোনকলই এসেছে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া থেকে। বাভারিয়া থেকে কল এসেছে ১৮ শতাংশ। বাকি ফোনকলগুলো অন্যান্য রাজ্য থেকে এসেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হেল্পলাইনে যে পুরুষরা ফোন করছেন তাদের মধ্যে অন্তত চারভাগের মধ্যে তিনভাগই ৫১ বছরের কম বয়সী পুরুষ। ৫৩ শতাংশ পুরুষ শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ৮৫ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। ৭০ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, তারা খুবই সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
তিন ভাগের দুই ভাগ অভিযোগকারী নিজেই ফোন করেছেন। ১০ ভাগের একভাগ ক্ষেত্রে আশপাশের মানুষ বা পরিচিতরা ফোন করেছেন। বাকি ফোন এসেছে পেশাদার পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে।
সম্প্রতি হেল্পলাইনের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই পরিষেবা আরও বাড়ানো হচ্ছে। এজন্য আরও বেশকিছু পেশাদার কর্মী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে সেবার সময়ও বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বার্তা বিভাগ প্রধান