Home » শহরে ঘরোয়া পরিবেশে তিন দিনব্যাপী ‘সাংগ্রাই’ উৎসব শুরু

শহরে ঘরোয়া পরিবেশে তিন দিনব্যাপী ‘সাংগ্রাই’ উৎসব শুরু

এম.এ আজিজ রাসেল : কক্সবাজারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়া পরিবেশে রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ ও বিদায়ের তিন দিনব্যাপী ‘সাংগ্রাই’ বা জলকেলি উৎসব শুরু হয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল চন্দন জলে বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এসময় করোনা মহামারী থেকে মুক্তিলাভে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ এপ্রিল পাড়া—মহল্লায় চলে শিশুদের জলকেলি। শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবদি সীমিত আয়োজনে মৈত্রিময় জলকেলিতে মেতে উঠে রাখাইন তরুণ—তরুণীরা।
শনিবার দুপুরে টেকপাড়া, হাঙর পাড়া, বার্মিজ স্কুল এলাকা, পূর্ব—পশ্চিম মাছ বাজার, ক্যাং পাড়া ও বৈদ্যঘোনাস্থ থংরো পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, এবার সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন চলমান থাকায় উৎসবে আগের মতো রঙ নেই। কমেছে প্যান্ডেলের সংখ্যা। আগে শহরে ২০—২৫টি জলকেলির প্যান্ডেল হতো। বর্তমানে করোনা মহামারীতে তা কমে নেমে এসেছে ৬—৭টিতে। তাও প্যান্ডেলগুলো ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি করা। আনন্দ উচ্ছাসের মাত্রা কমলেও প্যান্ডেলগুলোতে ছিল উৎসাহ—উদ্দীপনা। সবার মুখে মুখে ছিল মাস্ক। তবে প্যান্ডেল ছোট ছোট শিশুরা বসে ছিল। খানিক পর পর রাখাইন তরুণ—তরুণীরা একে অপরের গায়ে জল ছিটিয়ে পুরোনো বছরের হতাশা দূর করে নতুন বর্ষে নব আলোকে পথ চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসময় সবার মাঝে শুধু একটি প্রার্থনা করোনা মুক্ত হোক পৃথিবী। আবারও সবার মুখে ফুটে উঠুক অনাবিল আনন্দের হাসি। যে হাসি ভুলে দেবে করোনার ঘোর অন্ধকার।

 

রাখাইন তরুণ—তরুণীরা জানান, আধিকাল থেকে রাখাইন নববর্ষ উপলক্ষে সামাজিক ভাবে সাংগ্রে পোয়ে উৎসব পালন হয়ে আসছি। তবে এবার করোনার কারণে উৎসব হচ্ছে সীমিত পরিসরে। নববর্ষ উপলক্ষে আমরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানোর মধ্য দিয়ে পুরনো দিনের সব ব্যথা, বেদনা, হিংসা বিদ্বেষ ভুলে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।
কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্য থিং অং জানান, ১৬ এপ্রিল রাত ১২ টায় ১৩৮৩ রাখাইন অব্দ শেষ হয়েছে। ১৭ এপ্রিল থেকে ১৪৮৪ নতুন অব্দ শুরু হয়েছে। বর্ষবরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন সাংগ্রাই বা জলকেলি উৎসবে ওঠেন। এটি রাখাইন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির অংশ। করোনা মহামারীর কারণে এবার সীমিত আকারে জলকেলিতে মজেছে শিশু—কিশোর ও তরুণ—তরুণীরা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *