করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৯ মার্চ ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ৫-১১ এপ্রিল অফিস-আদালত খোলা রেখে সীমিত মাত্রারা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ওইসব পদক্ষেপ কার্যত কোনো ফল দেয়নি। ফলে ১৪ এপ্রিল সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্বক লকডাউনের ঘোষণা আসে। কিন্তু গত ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেওয়া আনুষ্ঠানিক আদেশে সর্বাত্বক লকডাউনের ঘোষণা আসেনি। সেখানে কল-কারখানা খোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। খোলা আছে ব্যাংকও। এই অবস্থার লকডাউন চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। চলতি লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। চলমান লকডাউনে প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে যেতে পুলিশের কাছ থেকে নিতে হচ্ছে ‘মুভমেন্ট পাস’। করোনারোধে সরকারের এসব বিধিনিষেধ পালনে কিছু সুফল মিলা শুরু করেছে। তাই এসব কিছু বিবেচনায় চলমান লকডাউনকে অন্তত আরো এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮-২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে লকডাউন নিয়ে হওয়া গত সপ্তাহের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ১৪ দিনের কথা আলোচিত হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহ করে লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাই ২১ এপ্রিলের পর বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতি আরো এক সপ্তাহ বাড়ছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরকারকে অন্তত ২১ দিনের লকডাউন দিতে সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের জীবন-জীবিকাসহ সবদিক চিন্তা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
প্রশাসনিক, কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটিসহ একাধিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের করোনাভাইরাসের আক্রমণের যে শক্তি তা ভয়ঙ্কর। তাই এই যাত্রায় দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে লম্বা সময়ের জন্য দূরপাল্লার বাস, বিনোদন কেন্দ্র, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। এমন অবস্থায় বর্তমান লকডাউন ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত চললে এরপর ঈদকে সামনে রেখে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকার বিশেষ কিছু বিষয়ে ছাড়া দিতে পারে। অর্থাৎ সংক্রমণের হার কমতে থাকলে কিছুটা ছাড় মিললেও সেটা খুব সামান্য বিষয়ে হতে পারে। এভাবে বর্তমানে যে গরম পর্যায়ের লকডাউন চলছে তা সামান্য নরম হতে পারে। কিন্তু সেই নরমমাত্রা দূরপাল্লার বাস চালুর অনুমতি মিলার সম্ভাবনা কম। বন্ধ থাকবে সব বিনোদন কেন্দ্রও। এভাবে ঈদের ছুটি পর্যন্ত সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে সরকার।
বার্তা বিভাগ প্রধান