অনলাইন ডেস্ক: চার বছর আগে, বিজেপির স্লোগান ছিল— ‘ঘর ঘর মোদী’। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীরা স্লোগান তুলবে— ‘বাই বাই মোদী’!
কর্নাটকে জোট গড়ে বিজেপিকে বিধ্বস্ত করার পরেই আগামী লোকসভার স্লোগান তুলে দিল রাহুল গাঁধীর দল। গত কাল ইয়েদুরাপ্পা ইস্তফার কথা ঘোষণা করার পরেই দেশজুড়ে জোটের বার্তা দিয়েছিলেন রাহুল। এ বারে সেটিকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হল।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী কুমারস্বামী আগামিকালই দিল্লি আসছেন রাহুলের সঙ্গে আলোচনা করতে। বুধবারের শপথ অনুষ্ঠানটিকে মোদী-বিরোধী জোটের প্রথম মঞ্চ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন তিনি। সেখানে রাহুল ছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, তেজস্বী যাদবদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন কুমারস্বামী। শপথ অনুষ্ঠানের পর কোনও অভিন্ন ইস্যুতে একজোট বিরোধীদের দেশজুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি তৈরির আলোচনাও চলছে তলে তলে।
বিরোধী এক নেতার কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে পেট্রল-ডিজেলের দামে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কর্নাটকের সাফল্যের পরে সেই বিষয়টি নিয়ে বিরোধী জোটের আন্দোলন হতেই পারে।’’ এ দিন সন্ধ্যাতেই তেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এতে সব কিছুরই দাম বাড়বে। সাধারণ মানুষ, কৃষক-সহ অনেকেই এর ফল ভুগবেন।’’
তেলের দাম প্রসঙ্গে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এ দিন বলেন, ‘‘তেলের দাম নিয়ে সরকারের কিছু করার নেই। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ যদিও কী ব্যবস্থা, তা বলেননি তিনি।
২০১৯ সালের লোকসভা যে ‘মোদী বনাম বিরোধী জোট’ হতে চলেছে, তা জানে বিজেপি। তাই দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অমিত শাহ লোকসভার কেন্দ্রওয়ারি রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছেন নেতাদের। বিরোধীরা এক কংগ্রেস নেতার মতে, এককাট্টা বিরোধীরা বড় বিপদ, এই আশঙ্কা থেকেই ক’দিন আগে অমিত বিরোধী জোটকে ‘কুকুর-বিড়াল’ বলেছিলেন। আজ অনেকটা সেই সুরে একই কথা বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিন্হা।
কর্নাটকে মুখ পোড়ার পরেও অবশ্য বিরোধী ঐক্যের তোড়জোড়কে প্রকাশ্যে লঘু করে দেখাচ্ছেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘গত ভোটেও সকলে নিজ নিজ রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়েছেন। তাতেও বিজেপি জিতেছে। অখিলেশ পশ্চিমবঙ্গে বা মমতা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে তো লড়বেন না!’’ বিজেপির বক্তব্য, বিরোধীদের তাদের নেতার ঠিক নেই। রাহুল থেকে মমতা, শরদ পওয়ার থেকে দেবগৌড়া— সকলেই প্রধানমন্ত্রী হতে চান। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে আটকে যাবে জোটের গঠন।
কংগ্রেস এখনও বলছে, রাহুলই নেতৃত্ব দেবেন জোটের। দলকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো রাহুলের অগ্রাধিকার। একলা চলো অবস্থান থেকে সরে এসে জোট গড়াও জরুরি। কর্নাটকে কুমারস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রস্তাব দিয়ে সেই বার্তা দিয়েছেন রাহুল। এখন দরকার, বিজেপিকে হারাতে সকলকে একজোট করা। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘বিরোধীরা হাত ধরলে ১১টি রাজ্যে প্রায় সাড়ে তিনশো আসনে মোদীকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা যাবে। গত লোকসভায় বিরোধীরা আলাদা লড়ায় ফায়দা তুলেছেন মোদী।’’
কর্নাটকের ফলে সন্তোষ প্রকাশ করে রজনীকান্ত বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী, বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হয়। কংগ্রেস-জেডি(এস) সেটা করতে চলেছে। একে গণতন্ত্রের জয় হিসেবে দেখছি।’’
নির্বাহী সম্পাদক