এম এ আজিজ রাসেল: শহরের প্রাচীনতম বৃহত্তর টেকপাড়া জনকল্যাণ সমাজ কমিটি নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ঐতিহ্যবাহী এই সমাজকে ধ্বংস করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই সিন্ডিকেটটি হুট করে সাধারণ সদস্যদের মতামত না নিয়ে সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বিএনপি—জামায়াতের নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে সর্বত্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ সভাবিহীন ও সমাজের কেউ না এমন ব্যক্তিদের দ্বারা ঘোষিত প্রশ্নবিদ্ধ এই কমিটি প্রত্যাখান করেছে সাধারণ সদস্যরা।
সমাজের সাধারণ সদস্যরা অভিযোগে জানান, বৃহত্তর টেকপাড়া জনকল্যাণ সমাজ কমিটি প্রতিষ্ঠা হয় বিগত ৬০ বছর আগে। পর্যায়ক্রমে এই সমাজে বিভিন্ন ব্যক্তি নেতৃত্ব দেন। সর্বশেষ সদ্য বিদায়ী কমিটি বিগত ৩ বছরে সমাজের ব্যাপক উন্নয়ন হয়। আধুনিকায়ন করা হয় সমাজ ঘরসহ নানা কার্যক্রম। চালু করা হয় সমাজের সদস্যদের সন্তানদের উপবৃত্তি, জেএসসি, এসএসএসি ও এইচএসসি পরীক্ষর্থীদের সংবর্ধনা, বিবাহ ভাতা, মৃত্যু ভাতা, ইছালে ছওয়াব মাহফিল, বার্ষিক পিকনিকসহ নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম। ইভটিজিং, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে নেয়া হয় নানা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নেও ভূমিকা রাখে ওই কমিটি। কিন্তু বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কথা ছিল আহবায়ক কমিটি সমাজের গোষ্ঠী অনুসারে নবীন—প্রবীণদের মতামত নিয়ে সাধারণ সভা ডেকে একটি গ্রহণযোগ্য নতুন কমিটি ঘোষণা করবে। তবে আহবায়ক কমিটির কেউ নতুন কমিটিতে অন্তভুর্ক্ত হতে পারবে না। কিন্তু সাধারণ সদস্য অবহিত না করে ও কারো সাথে কোন ধরণের আলোচনা বা সভা না ডেকে একটি সিন্ডিকেট প্রশ্নবিদ্ধ পকেট কমিটি ঘোষণা করে। যাদের কমিটি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তারাই নিজেদের ইচ্ছেমতো পদ—পদবী নিয়ে কমিটি ঘোষণা করে। এছাড়া গঠনতন্ত্রে রয়েছে পর পর ৩টি সভায় অংশগ্রহণ না করলে সদস্যপদ বাতিল করা হবে। সমাজের সভাসহ নানা কার্যক্রমে বিগত ৩ বছরেও যারা অংশ নেয়নি তাদের নিয়ে এমন প্রশ্নবিদ্ধ কমিটি গঠন করা হয়। ঘোষিত কমিটির অধিকাংশই বিএনপি ও যুবদল নেতা। সাধারণ সদস্যরা অবিলম্বে এই পকেট কমিটি বাতিল করে নতুনভাবে সর্বসম্মতিক্রমে কমিটি গঠন করার দাবি তুলেন।
বৃহত্তর টেকপাড়া জনকল্যাণ সমাজ কমিটির প্রবীণ সদস্য ইসহাক সওদাগর বলেন, সমাজের কমিটি হবে সাধারণ সভা ডেকে সকল সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে। কারো ঘরে বসে হুট করে পকেট কমিটি ঘোষণা কেউ ভালভাবে নেয়নি। অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করতে হবে। নতুবা সমাজের সবাইকে সাথে নিয়ে নতুন আরেকটি কমিটি ঘোষণা করা হবে।
সদ্য বিদায়ী কমিটির নির্বাহী সদস্যের দায়িত্ব পালন করা জাহাঙ্গীর জানান, সবাইকে সাথে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে কমিটি ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে কার বা কিসের স্বার্থে এই প্রশ্নবিদ্ধ কমিটি হয়েছে তা সবাই ভাল করেই জানে। এই সমাজ কারো একার না। সবাইকে সাথে নিয়ে গ্রহণযোগ্য কমিটি করতে হবে।
আরেক সদস্য হায়দার নেজাম বলেন, একটি সিন্ডিকেট চায় টেকপাড়ার সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে আসুক। তাঁরা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। জোর করে নেতৃত্ব নেয়া যায় না। প্রয়োজনে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব ঠিক করবে সাধারণ সদস্যরা। প্রশ্নবিদ্ধ এই কমিটি সবাই প্রত্যাখান করেছে। এই কমিটি বাতিল না হলে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা হবে। প্রয়োজনে আদালতে যাবো আমরা।
নির্বাহী সম্পাদক