খাদ্যপ্রিয় বাঙালির কাছে ভাতঘুম বিষয়টা ভীষণ পছন্দের। আর আমরা অনেক সময় এই ঘুম আসার বিষয়টাকে চিহ্নিত করি হাই তোলার মাধ্যমে। আমাদের আশেপাশে যদি কোন ব্যক্তি ঘনঘন হাই তুলে থাকে, তাহলে আমরা ধরেনি তিনি হয়তো খুব ক্লান্ত অথবা তার খুব ঘুম পেয়েছে বলে। তবে আমরা কেন হাই তুলি জানেন কি? এই বিষয়টা হয়তো আমাদের কাছে খানিকটা অজানা।
অনেকে মনে করে ঘনঘন হাই তোলা আমাদের শরীরের পক্ষে খুব খারাপ। এর ফলে হয়তো আমাদের শরীরে অজান্তে দানা বাঁধতে পারে কোন রোগ। তবে এই বিষয়ে বলে রাখা ভালো হাই তোলা শরীরের পক্ষে খারাপ এই ধারণার মধ্যে কোন সত্যতা নেই। তবে কেনো আমরা হাই তুলি? চলুন দেখে নেওয়া যাক আমরা সচরাচর কেন হাই তুলে থাকি এবং এর ফলে আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে কী কী ঘটে থাকে।
পুরনো সময় থেকে আমাদের মধ্যে একটা বিশ্বাস তৈরি হয়ে এসেছে যে হাই তোলা মানে ঘুমের সংকেত, কিন্তু এই ধারণা একদম ভুল তা চিকিৎসা বিজ্ঞান জানিয়েছে। আমাদের মস্তিষ্কের পুনরায় তার কার্যক্ষমতা দ্বিগুণ করার জন্য আমরা হাই তুলে থাকি। সহজভাবে বলতে গেলে হাই তোলার ফলে আমাদের ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, আর মস্তিষ্ক মধ্যে দ্বিগুণ কাজ করার ক্ষমতা চলে আসে।
অনেকেই আমরা হাই তোলার বিষয়টাকে খুব সামান্য চোখে দেখে থাকি। তবে বিজ্ঞানের নজরে যদি দেখা হয় তাহলে মানুষ হাই তুলে থাকে বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন আমাদের মুখগহবরের মধ্য দিয়ে ইয়ার ড্রামস প্রবেশ করানোর জন্য। কিছু কিছু সময় আমরা অন্যদের দেখে হাই তুলে থাকলেও সাধারণত শরীর তার প্রয়োজন অনুসারে হাইয়ের মতো বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
দীর্ঘ সময় ধরে অফিসে মনোযোগ দিয়ে কাজ করার সময় একাধিকবার আমাদের হাই উঠে থাকে। এমনটা হয় তার কারণ মন দিয়ে কাজ করার ফলে আমাদের মস্তিষ্ক খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ক্লান্ত হয়ে পরে। আর সেই কারণে মস্তিষ্কের পুনরায় তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা হাই তুলে থাকি। অনেক সময় খেয়াল করে লক্ষ্য করবেন একভাবে কাজ করার পর হঠাৎ করে হাই তুললে আমরা সেই কাজের উপর আরো বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারি, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানও বলছে।
এর পাশাপাশি চিকিৎসা বিজ্ঞান আরও জানাচ্ছে, অনেক সময় হাই ওঠার ফলে আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামাইন লেভেল বেড়ে যায়, যার ফলে অক্সিটোসিন নামে এক ধরনের কেমিক্যাল এর ক্ষরণ বেড়ে যায়। আর এই ক্ষরণের ফলে আমাদের মন মেজাজ ভালো হয়ে ওঠে। সেকারণে অনেক চিকিৎসক জানিয়েছে হাই তোলা খারাপ নই, বরং তা ভালো৷
নির্বাহী সম্পাদক