Home » করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে জনসমাগম নিষিদ্ধ, প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে জনসমাগম নিষিদ্ধ, প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ ২২ দফা চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রোববার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এরপর সরকারের অনুমোদন পেলে এটি জারি হতে পারে। প্রস্তাবের নির্দেশনাগুলো কমপক্ষে আগামী ৩ সপ্তাহ পালনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সারা দেশে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতোমধ্যে সংক্রমণের হার ১৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। রি-প্রডাকশন সম্বর (আরনট) প্রায় দেড় শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দুটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। একটি সারা দেশের জন্য, অপরটি প্রযোজ্য এলাকার জন্য।

সারা দেশের জন্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে-

১. সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। কমিউনিটি সেন্টার/কনভেনশন সেন্টারে বিয়ে/জন্মদিন/সভা/ সেমিনার ইত্যাদি অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা।

২. বাড়িতে বিয়ে/জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

৩. মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করা (ওয়াক্তিয়া নামাজে ৫-এর অধিক নয় এবং জুমার নামাজে ১০-এর অধিক নয়)।

৪. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার হল সব ধরনের মেলা বন্ধ রাখা।

৫. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন না করা।

৬. উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল বন্ধ থাকা। অভ্যন্তরীণ বিমান ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন না করা।

৭. সব আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচল (স্থল/বিমান/সমুদ্র) সীমিত করা। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

৮. নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জরুরি দ্রব্যাদির ক্রয়/বিক্রয় খোলা/উন্মুক্ত স্থানে নিশ্চিত করা। ওষুধের দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা।

৯. শপিংমল বন্ধ করা।

১০. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা।

১১. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সর্বদা নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা।

১২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা।

১৩. বাড়ির বাইরে জনগণের অপ্রয়োজনীয় ঘোরাঘুরি/ জনসমাগম/আড্ডা বন্ধ করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৮টার পর বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিষেধ।

১৪. হোটেল- রেস্তোরাঁগুলোয় বসে খাওয়া বন্ধ রাখা। তবে হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে।

১৫. প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে সর্বদা নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা। মাস্ক না পরলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৬. করোনা উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

১৭. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি সব অফিস/শিল্পকারখানা বন্ধ রাখা। জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রতিদিন ৩৩ ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীর দ্বারা কর্মসম্পাদন করা। অসুস্থ/গর্ভবতী/৫৫ বছরের ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে থেকে অফিস নিশ্চিত করা।

১৮. অফিসে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা।

১৯. প্রতিষ্ঠানগুলোর সব সভা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সেমিনার অনলাইনে করা।

২০. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোনো ধরনের পরীক্ষা স্থগিত রাখা।

২১. প্রয়োজনে উচ্চ সংক্রমিত এলাকাতে লকডাউন করা।

২২. প্রত্যেক এলাকার বর্জ্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঢাকনাযুক্ত অবস্থায় সংরক্ষণ এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানান্তর নিশ্চিত করা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *