সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় স্থানীয় সাংবাদিক কামাল হোসেনকে (৩০) গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৫ মার্চ) সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. খালেদ মিয়ার আদালতে হাজির হয়ে এই আসামিরা জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মামলার মূল আসামি মাহমুদ আলী শাহ ও তার সহযোগী দীন ইসলাম।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদের তীর কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক কামাল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। তাকে ধরে এলোপাতাড়ি মারধরের পর একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে আবার নির্যাতন করা হয়। এ সময় তার মোটরসাইকেল, মুঠোফোন ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়। কামাল হোসেন দৈনিক সংবাদ এবং সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক শুভ প্রতিদিনের তাহিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
এ ঘটনার পরদিন কামাল হোসেন বাদী হয়ে ঘাগটিয়া গ্রামের মাহমুদ আলী শাহ (৩৮), রইস উদ্দিন (৪০), দীন ইসলাম (৩৫), মুশাহিদ তালুকদার (৪৫) ও মনির উদ্দিনের (৫২) নাম উল্লেখসহ আরও পাঁচ-ছয়জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর পুলিশ মামলার এজহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি রইস উদ্দিন ছাড়াও ঘাগটিয়া গ্রামের ফয়সল আহমদ (১৯), আনহারুল ইসলাম (২০), তাহের হোসেন (২০) ও মাসরিবুল ইসলামকে (২৬) গ্রেফতার করে। এই আসামিরা এখন জামিনে আছেন।
সোমবার (১৫ মার্চ) মামলার এজহারভুক্ত অপর চার আসামি মাহমুদ আলী শাহ, দীন ইসলাম, মুশাহিদ তালুকদার ও মনির উদ্দিন আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালতের বিচারক মাহমদু আলী শাহ ও দীন ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী সালেহ আহমদ দুই আসামির জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কামাল হোসেনের পরিবার ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাদুকাটা নদের তীর কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সংবাদের তথ্য সংগ্রহ ও ছবি নিতে ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ওই এলাকায় যান কামাল হোসেন। সেখানে ঘাঘটিয়া গ্রামের মাহমুদ আলী শাহসহ কয়েকজন লোক তাকে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। ওই ব্যক্তিরা পরে তাকে পাশের চকবাজারে ধরে নিয়ে যান। সেখানে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়।
খবর পেয়ে কামাল হোসেনের পরিবারের লোকজন এলাকার বাদাঘাট ফাঁড়ি থেকে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক কামাল হোসেনকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
নির্বাহী সম্পাদক