Home » এক বছরে করোনা কত কী দেখালো

এক বছরে করোনা কত কী দেখালো

বাংলাদেশ করোনা মহামারির এক বছর পার করলো আজ (৮ মার্চ)। গতবছরের এই দিনে দেশে তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগীর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর ঠিক ১০ দিন পর করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় অধিদফতর। এরপর থেকে প্রতি মাসেই কোনও না কোনও ঘটনার জন্ম দিয়েছে করোনা।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারি ঘোষণা করে ১১ মার্চ। দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। দেশে দেশে দেওয়া হয় লকডাউন। শক্তিশালী দেশ হতে শুরু করে দরিদ্রতম দেশটিও রেহাই পায়নি এর ভয়াল থাবা থেকে।

৮ মার্চ প্রথম তিনজন করোনা শনাক্ত রোগীর মধ্যে দুজন ছিলেন পুরুষ, একজন নারী। তাদের মধ্যে দুজন ইতালি ফেরত ছিলেন। বাকি একজন ছিলেন তাদের একজনের পরিবারের সদস্য।

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে আগে থেকেই জনমনে ক্ষোভ ছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সেটা আরও জোরালো হয়। উঠে আসে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির নানা চিত্রও। শুরুতে সমন্বয়হীনতা প্রকট আকার ধারণ করে। যার কারণে দেশজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

শুরুর আড়াই মাস কাজে লাগাতে পারেনি মন্ত্রণালয়। উল্টো চিকিৎসকদের দেওয়া হয় নিম্নমানের পিপিই। সুরক্ষা উপকরণ কেনাকাটায় ধরা পড়ে দুর্নীতি। অনুমোদনহীন হাসপাতালকে করা হয় করোনার জন্য ডেডিকেটেড। হাসপাতালগুলোতে ছিল না ট্রায়াজ ব্যবস্থাপনাও। এসব কারণে প্রায় প্রতিদিনই রোগী থেকে আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। লকডাউন করতে হয়েছে পুরো হাসপাতাল। শুরুর দিকে নমুনা পরীক্ষা, রিপোর্ট দিতে দেরি করা, নমুনা পরীক্ষায় রোগীর ভোগান্তি; মোটকথা, করোনা ব্যবস্থাপনার আগাগোড়া ছিল প্রশ্নের মুখে।

নকল মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় বিব্রত হয় কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি বলেও জানায় চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা, চিকিৎসা, নকল রিপোর্ট নিয়ে হাসপাতালের জালিয়াতিতে খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বোচ্চ পদে রদবদল হয়। মহামারির সময়ে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায় মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরকে। বদল হয় স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্যের মহাপরিচালকের পদ।

শুরুতে সংকট ছিল ভেন্টিলেটর, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, অক্সিজেন সিলিন্ডার, আইসিইউ শয্যাসহ জরুরি সব চিকিৎসা সামগ্রীর। যদিও ধীরে ধীরে এসব সংকট কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *