সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় একজনের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রায়হান হত্যা মামলার আসামী পুলিশ কন্টেবল হারুনুর রশিদের পক্ষে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন। শুনানী শেষে আদালতের বিচারক আব্দুর রহিম জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেন বলে আদালত সূত্র জানায়। শুনানীকালে হারুনকে আদালতে আনা হয়নি।
রায়হানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, আদালতে পুলিশ কনস্টেবল হারুন জামিনের আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেন। রায়হান হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি হারুন জড়িত ছিলো। জামিন শুনানীকালে আমরা জামিনের বিরোধীতা করেছি। এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল কয়েকজন আদালতে পূর্বে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমাদের বক্তব্য আদালত শুনার পর জামিন না মঞ্জুর করেন।
এরআগে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় আসামীদের জামিনের বিষয়ে খবর পেয়ে রায়হানের মা’সহ তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন।
হারুনের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, আদালত ন্যায় বিচার করেছেন জামিন না দিয়ে। আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি, ছেলে হারানো কত কষ্টকর তা একজন মা ভালো বলতে পারবেন। আমি ছেলে হত্যার যথাযথ বিচার চাই।
আমি আমার ছেলেকে হারিয়ে আজ পথে। কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল হারুন গোপনে আদালতে জামিন নিতে চাচ্ছে। বিষয়টি আমি জানার পর পরই আদালতে ছুটে আসি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। আমার দাবি একটাই আমার ছেলে হত্যার বিচার।
জানা যায়, গতকাল ১১ জানুয়ারি রায়হান হত্যার তিনমাস পূর্ণ হয়েছে। নগরীর আখালিয়ার নেহারীপাড়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে গত বছরের ১১ অক্টোবর দিবাগত রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে আসে। রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে ফাঁড়িতে ধরে আনে পুলিশ। সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে রায়হানকে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয়। ৬টা ৪০ মিনিটে ওসমানী হাসপাতালে নেয়া হয় এবং ৭টা ৫০ মিনিটে মারা যায় রায়হান। ঐ দিনই ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।
প্রতিনিধি