বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েশা খানম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার ভোর ৫টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
দীর্ঘদিন ধরে এই নেত্রী ক্যানসারে ভুগছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে তার পারিবারিক সূত্র। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ খবর জানিয়েছেন।
ওই বার্তায় বলা হয়, বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল প্রগতিশীল আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন আয়শা খানম। ছাত্র জীবন শেষে বঞ্চিত অধিকারহীন নারীদের অধিকার আদায়ে আমৃত্যু নিয়োজিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এক অকৃত্রিম অভিভাবককে হারালো।
মালেকা বানু জানান, আয়শা খানম দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। গতকাল শুক্রবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং শনিবার ভোরে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি আরও জানান, আয়শা খানমের মরদেহ সকাল ৯টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেওয়া হবে। এরপর সেখান থেকে নেত্রকোণায় নিজ গ্রামে নেওয়া হবে তার মরদেহ।
সেখানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে স্বামী প্রকৌশলী মরতুজা হাসানের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানান মালেকা বানু।
১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর নেত্রকোনার গাবড়াগাতিতে জন্মগ্রহণ করেন আয়শা খানম। বাবা গোলাম আলী খান ও মা জামাতুন্নেসা খানম। হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক আয়শার। তবে ১৯৬৬ সাল থেকে ছাত্র আন্দোলনে পুরোপুরি সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ফলে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনসহ স্বাধীনতাযুদ্ধের পথে এগিয়ে যেতে যেসব আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল সবগুলোতেই তিনি সামনের সারিতে ছিলেন।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং সংগ্রামী নেত্রী আয়শা খানম বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া রোকেয়া হলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
প্রতিনিধি