আপত্তি, অভিযোগ, দাবির যেনো শেষ নেই সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের। সিলেটের বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে তিনদিনব্যাপী ধর্মঘট পালন করছে সিলেটের পরিবহন সংশ্লিস্ট সব সংগঠন।
সাধারণ মা্নুষকে জিম্মি করে এই ধর্মঘট চলাকালেই নতুন দাবি নিয়ে হাজির হয়েছেন তারা। এবার পরিবহন শ্রমিকরা আপত্তি তুলেছেন বিআরটিসির বাস নিয়ে।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সিলেট-শ্রীমঙ্গল ও সিলেট-হবিগঞ্জ রুটে বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেছে সরাকারি পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। এই দুই রুটে প্রতিদিন ৬ টি করে বাস চলবে বলে জানিয়েছে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ যাত্রীরা বিআরটিসির বাস চালু করাকে স্বাগত জানালেও এতে আপত্তি জানিয়েছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। বরং এই দুই রুটে বিরটিসির বাস চলতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন তারা। বিআরটিসির বাস বন্ধে আন্দোলনে নামারও হুমকি দিয়েছেন তারা।
তবে বিআরটিসি’র সিলেটের কর্মকর্তারা বলছেন, পরিবহন মালিক-শ্রিমকরা নিজেদের ব্যবসা কমে যাওয়ার স্বার্থে বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। তবে আপত্তি সত্ত্বেও বাস চলবে। আগামীতে উপজেলা পর্যায়েও বিআরটিসি বাস চালু হবে।
এরআগে সিলেট-সুনামগঞ্জ ও সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে বিআরটিসির বাস চালু নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে তাদের আপত্তি সত্ত্বেও এই দুই রুটে বাস চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
নতুন দুই রুটে বিআরটিসির বাস চালু নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, সিলেটের কোষাধ্যক্ষ শামসুল হক মানিস বলেন, শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ রুটে বিআরটিসির বাস বন্ধের দাবিতে আমরা আজ (বুধবার) থেকে মাঠে নেমেছি। বাস-মিনিবাস মালিক সমিতিও আমাদের সাথে আছে। আমরা কিছুতেই এই দুই রুটে বিআরটিসির বাস চলতে দেবো না।
মানিক বলেন, এই দুই রুটেই পর্যাপ্ত বাস রয়েছে। বিআরটিসি ইচ্ছে করলেই যে কোনো সড়কে বাস সার্ভিস শুরু করতে পারে না। যে কোনো জায়গায় তাদের বাস যেতে পারে না। এটা তাদের আইনের পরিপন্থী।
তিনি বলেন, বিআরটিসির বাস চালু হলে আমরা পুরো বিভাগের বাস মালিক শ্রমিকদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাকত দেবো।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আপত্তি জানালেও শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ রুটে বিআরটিসির বাস সার্ভস উদ্বোধনকে স্বাগত জানিয়েছেন এই দুই রুটের যাত্রীরা। মঙ্গলবার উদ্বোধনের পর থেকেই তারা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এরফলে বেসরকারি বাসের নৈরাজ্য থেকে নিস্তার মিলবে বলেও অভিমত প্রকাশ করেছেন অনেকে।
বিআরটিসি’র সিলেট ডিপোর ব্যবস্থাপক জুলফিকার আলী এ ব্যাপারে বলেন, বুধবার উদ্বোধন হলেও ধর্মঘটের কারণে আমরা যাত্রীসেবা শুরু করতে পারিনি। আশা করছি রোববার থেকে সার্ভিস শুরু হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা রয়েছে সব জেলায় এমনকি উপজেলা পর্যায়েও বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করার। ফলে কোনো আপত্তিই গ্রহণযোগ্য হবে না। বাস চলবেই।
জুলফিকার বলেন, করপোরেশন জনস্বার্থে যে কোনো রুটে যাত্রী পরিবহন করতে পারবে- এটি আমাদের সংশোধিত আইনে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে বিআরটিসি আইনের দোহাই দিয়ে শ্রমিক নেতাদের আপত্তি একেবারেই অমূলক।
প্রসঙ্গত, সিলেটের বন্ধ থাকা কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘট পালন করছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ। এতে অংশ নিয়েছে সিলেটের পরিবহন সংশ্লিস্ট অন্যান্য সংগঠনও। ফলে পণ্য ও যাত্রীবাহী সব ধরণের পরিবহনই বন্ধ রয়েছে বিভাগজুড়ে।
প্রতিনিধি