অনলাইন ডেস্ক : প্রায় ৪০০ বছর পর কাছাকাছি আসছে বৃহস্পতি ও শনি গ্রহ। সোমবার আকাশে ঘটতে চলেছে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা। গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ আবিষ্কারের ১৩ বছর পর ১৬২৩ সালে শেষ বার এই দুই গ্রহকে এত কাছাকাছি দেখা গিয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এটি খালি চোখে দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি এক বিরলতম ঘটনা। শনি ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে দূরত্ব ৭৬ কোটি কিলোমিটার। দু’টি গ্রহই নিজের নিজের কক্ষপথে ঘুরে চলেছে। কিন্তু নিজের কক্ষপথে খাকাকালীন কেউ পূর্বে থাকে, তো কেউ পশ্চিমে থাকে। এই প্রথম তারা এক জায়গায় আসছে। এদের দূরত্ব একই থাকছে। কিন্তু এরা ধরা পড়তে চলেছে একই দৃষ্টিপথে। যাকে বলা চলে মহা সংযোগ।
সাধারণত শনি ও বৃহস্পতি দু’টি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অত্যন্ত বেশি। সেই কারণে গ্রহাণু হামলার হাত থেকে তারাই ছাতার মতো রক্ষা করে পৃথিবীকে। এই দুই গ্রহ নিজের শক্তির জোরে বেশির ভাগ গ্রহাণুকে নিজের দিকে টেনে নেয়। তারাই একসঙ্গে আসছে। এর সরাসরি প্রভাব পৃথিবীতে পড়বে না। শুধু উৎসাহী জনতা চাইলেই সন্ধ্যায় চোখে টেলিস্কোপ লাগিয়ে দেখতে পারেন এই দুই গ্রহের অবস্থান।
কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গ্রহ দুটির দূরত্ব থাকবে ৭৩০ মিলিয়ন কিলোমিটার। বৃহস্পতি থেকে পৃথিবীর দূরত্ব থাকবে ৮৯০ মিলিয়ন কিলোমিটার। শনি ও বৃহস্পতি গ্রহের পরবর্তী মহা সংযোগ হতে পারে ২০৮০ সালের ১৫ মার্চ।
গ্রহ দুটি সোমবার সূর্যাস্তের পর পর দেখতে হলে দক্ষিণ-পশ্চিম দিগন্তে তাকাতে হবে। বৃহস্পতিবার উপরের দিকে ডানপাশে থাকবে আকারে দেখতে ছোট শনি গ্রহ।
ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ গবেষক অধ্যাপক ডেভিড ওয়েইনট্রাব জানিয়েছেন, এমন ঘটনা একজন মানুষ তার জীবনকালে একবারই দেখার সুযোগ পেতে পারেন। বিজ্ঞানীরা একে বলছেন গ্রেট কনজাংশন বা মহাসম্মিলন কিংবা মহাযুগলবন্দি। এই মহাজাগতিক ঘটনাকে ক্রিসমাস স্টার ২০২০ নাম দিয়েছে নাসা।
সৌরজগতের সর্ববৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতি সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় প্রায় ১২ বছর। আর শনি যেহেতু সূর্য থেকে অনেক বেশি দূরে থাকে, তাই তার কক্ষপথের পরিধি বৃহস্পতির কক্ষপথের পরিধির চেয়ে অনেক বেশি। আর তাই একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে শনির লাগে প্রায় সাড়ে ২৯ বছর।
প্রতিনিধি