Home » বেতাগী খাসকাচারি মাঠে দেওয়াল নির্মাণ : চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড়

বেতাগী খাসকাচারি মাঠে দেওয়াল নির্মাণ : চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড়

অলি আহমেদ : বরগুনার বেতাগীতে ঐতিহাসিক খাসকাচারি মাঠে দেওয়াল দিয়ে আটকানো হচ্ছে। শত বছরের পুরানো ময়দানটি আটকানোর ফলে মানুষের চলাচলের রাস্তা ও সমাগমের পথরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে স্থানীয় মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে ও নিন্দার ঝড় বইছে।
দেরলাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ জনপদের রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থণীতি, সভা-সমাবেশ, ওয়াজ-মাহফিল, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মানুষের অধিকার আদায় সব কিছুর কেন্দ্র বিন্দু বেতাগী পৌর শহরের ঐতিহাসিক এ খাসকাচারি মাঠ। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির স্মৃতি বিজড়িত এই মাঠটি। প্রয়াত রাস্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমানসহ রাজনৈতিক নেতা, পীর-মাশয়েখ, বিভিন্ন সময় এখানে বক্তব্য রাখেন। এই মাঠেই বেতাগী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানিক ঘোষনা দেওয়া হয়। শুধূ তাই নয়, বছরের পর বছর ধরে এই মাঠে পৌর শহরের অস্থায়ী কাঁচা বাজার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ফল বিক্রেতা ও চায়ের দোকান দিয়ে শতাধিকের ওপরে মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে। রয়েছে ভাষা শহীদদের স্মরণে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

এ উপজেলার বিশেষ করে শহরবাসির চিত্ত বিনোদণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় আবালবৃদ্ধ,বণিতার থেকে শুরু করে সকল বয়সের মানুষ সকাল থেকে রাত অবধি জড়ো হয়ে আড্ডায় মেতে ওঠে কিন্ত দু:েখর বিষয় স্থানীয় ভ’মি অফিস হঠাৎ করে দেওয়াল নির্মাণ করছে। দেওয়ালটি নির্মাণ করা হলে বিনস্ট হবে শহরের সৌন্দার্য ও পরিবেশ। বিলীন হয়ে যাবে মাঠ। অন্ধকারে ঢাকা পড়বে স্থানীয় জনগোষ্ঠি। কর্মসংস্থান হারাবে ব্যবসায়ীরা। অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে এলাকাবাসী।

চায়ের দোকানি আজমল হোসেন অভিযোগ করেন, দেওয়াল নির্মাণের কারনে তারমত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয়ের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলা সচেতন নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম মন্টু বলেন, স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক সমাজিক ও সংস্কৃতিকর্মি আভিযোগ করেন, খাসকাচারি মাঠে দেওয়াল নির্মাণের ফলে শহরের সৌন্দর্য, দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বিনষ্ট ও মানুষের চলাচলের পথ রুদ্ধ হবে। শহরে জানজটের সৃষ্টি হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আমারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

জানা গেছে, জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে সংশ্ল্ষ্টিদের নিকট দেওয়াল নির্মাণ বন্ধে বিবেচনার অনুরোধ করা হলেও তাদের দাবিও উপেক্ষিত। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভ’মি অফিস ও ঠিকাদার কোন কোন কিছুতেই কর্ণপাত করছেন না। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যওে দেওয়াল নির্মাণে স্থানীয় মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান জানান, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংশ্ল্ষ্টিদের নিকট অবহিত করা হয়েছে কিন্ত এখনো কোন ফলাফল দেখছিনা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুহৃদ সালেহীন জানান, সরকারের সম্পত্তি রক্ষায় এ উদ্যোগ নেওয় হয়েছে। এতে মানুষের কোন সমস্যার সৃষ্টি করবে না। অস্থায়ী কাঁচা বাজারটি স্থানান্তর করা হবে।

তবে স্থানীয় নাগরিকরা দ্রুত দেওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *