‘কতিপয় ধর্মব্যবসায়ীর কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেওয়া হয়নি’- বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত কৃতী শিল্পী সম্মাননা ও ‘বাঙালির তীর্থভূমি’ স্মরণিকার প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মুসলমানরা কয়েকজন ধর্ম ব্যবসায়ীর কাছে ইসলাম ধর্ম লিজ দেয় নাই। তারাই সব বোঝেন আর কেউ কিছু বোঝেন না! সৌদি আরবে ভাস্কর্য জাদুঘর আছে, রাস্তায় রাস্তায় প্রাণীর, এমনকি সৌদি বাদশাহর মুখাবয়বসম্পন্ন ভাস্কর্যও আছে। মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফের ইমাম সাহেব, গ্র্যান্ড মুফতি এ নিয়ে তো কখনো প্রশ্ন তোলেন নাই।’
‘আমাদের দেশের এই কজন ধর্মব্যবসায়ী তাহলে মক্কা, মদিনার শরিফের ইমামের চেয়েও বেশি জ্ঞানী, ধর্ম নিয়ে বেশি বোঝেন!’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এরা ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আর এই দেশটি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে সবার আবাসস্থল হিসেবে স্বাধীন হয়েছে, সুতরাং এখানে ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ানো সংবিধান লঙ্ঘন, এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল বলেই এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।’
‘অতীতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে, ২০১৩-১৪-১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, শাপলা চত্বরে কোমলমতি মাদরাসাছাত্রদের নিয়ে এসে তাণ্ডব চালিয়ে বায়তুল মোকাররমে এমনকি পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং এসবে নেতৃত্বদানকারী ও তাদের অনুসারীরা সেই দায় এড়াতে পারে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আবার নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ভূখণ্ডে শত শত বছর ধরে ভাস্কর্য আছে। মোগল আমল থেকে স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বহুজনের, অনেক রাজনৈতিক নেতারও ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে। তখন কোনো কথা ছিল না। হঠাৎ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তারা প্রশ্ন তুললেন। এর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে ও সারা দেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির জন্য সব সাংস্কৃতিক সংগঠনকে আহ্বান জানাই।’
ড. হাছান বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে এক টাকাও ছাড় না করেই বিশ্বব্যাংক বলেছিল, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে, যা পরে সম্পূর্ণ ভ্রান্ত প্রমাণ হয়। কিন্তু সে সময় সিপিডি, টিআইবিসহ কয়েকটি সংগঠন, খ্যাতিমান কজন আইনজ্ঞ আর কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও বিশ্বব্যাংকের কথায় যেভাবে লাফালাফি শুরু করেছিলেন, যেভাবে বিশ্বব্যাংকের চেয়েও বড় গলায় দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছেন তা নজিরবিহীন। তখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাংকের টাকা লাগবে না। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব। আজ নিজস্ব অর্থায়নে তা প্রায় সম্পন্ন করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সক্ষমতা পৃথিবীকে জানান দিয়েছেন। আজকে সমগ্র দেশ, দেশের মানুষ উল্লসিত, উচ্ছ্বসিত। সূত্র: কালের কণ্ঠ
প্রতিনিধি