শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর:
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঙ্গলবার (৮ মে) নুসরাত জেবিন নামে এক যাত্রীকে ফেলে আসার অভিযোগ উঠেছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে। তবে, পরবর্তী সময়ে বিমানবন্দরের ম্যানেজারের হস্তক্ষেপে ওইদিন রাতের একটি ফ্লাইটে ওই যাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। ভুক্তভোগী নুসরাত জেবিন এই অভিযোগ করেন। শাহ আমানত বিমানবন্দরের ম্যানেজার মোহাম্মদ রিয়াজুল কবির অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নুসরাত জেবিন বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে ৪টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের আরএক্স ০৭৮৭ ফ্লাইটে ঢাকায় আসার জন্য টিকিট কেটেছিলাম। আমি বিমানবন্দরে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের মধ্যেই উপস্থিত হই। তখন রিজেন্টের লোকজন জানায়, বোডিং শুরু হয়নি। আমি বোডিং কাউন্টারের সামনে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো বসে থাকার পরও যাত্রীদের বোডিং শুরু করেনি রিজেন্ট। এরপর কাউন্টারে গিয়ে খোঁজ নিলে রিজেন্ট জানায়, ফ্লাইটটি দেরিতে ছাড়বে। কারণ ব্যাংকক থেকে তখনও বিমানটি এসে পৌঁছায়নি। তখন আমি কাউন্টারে জানালাম, বিমানবন্দরের স্কাই লাউঞ্জে গিয়ে আমি অপেক্ষা করছি, বোডিং শুরু হলে যেন তারা আমাকে জানায়।’ এই ভুক্তভোগী বলেন, ‘৪ টা ২০ মিনিট দিকে আমি খেয়াল করলাম, ফ্লাইট ছাড়ার নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ আমাকে ঢাকতে আসেনি। ওই সময়ের আমি দেখেছি, অন্য একজন যাত্রীকে ওই ফ্লাইটে ঢাকা আসার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন রিজেন্টের লোকজন। আমি ৪টা ২৫ মিনিটের দিকে বোডিং কাউন্টারে গিয়ে দেখি তখনও কাউন্টার ক্লোজড হয়নি। তখন তাদের কাছে আমার ব্যাগ দিয়ে বললাম আমাকে কেন ডাকলেন না, আমি তো ৪টা ৩৫ মিনিটের আরএক্স ০৭৮৭ ফ্লাইটের যাত্রী। তারা কোনও জবাব না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকলেন। একজন ভেতরে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে আমাকে তাদের সেলস কাউন্টারের দিকে যেতে বললেন। আমি বোডিং কাউন্টারে ব্যাগ রেখেই তার সঙ্গে সেলস কাউন্টারে গেলাম। তখন তিনি জানালেন, আমাকে রাতের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু কী কারণে আমি বিকেলের ফ্লাইটে যেতে পারবো না, সে উত্তর কেউ দেননি। অথচ তখনও ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি। রিজেন্টের স্টেশন ম্যানেজারে সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ কথা বলেননি আমার সঙ্গে।’ তিনি বলেন, ‘পরে আমি বিমানবন্দরের ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ করি। তখন তিনি রিজেন্টের লোকজনকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলেন। এরপর রিজেন্টের স্টেশন ম্যানেজার জিয়া সেখানে আসেন। আমাকে তিনি বলেন, রাতের ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে টিকিট করে দেবেন, কোনও অতিরক্তি ভাড়া বা চার্জা ছাড়াই। কিন্তু আমাকে কেন বিকেলের ফ্লাইটে আসতে দিলেন না, সে ব্যাপারে তারা কিছুই বললেন না। পরে রাতের ফ্লাইটেই আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছি। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাহ আমানত বিমানবন্দরের ম্যানেজার মোহাম্মদ রিয়াজুল কবির বলেন, ‘রিজেন্টের একজন যাত্রীকে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে সমস্যা হয়েছিল। যাত্রী বিকেলে আমার কাছে এসেছিলেন। আমি রিজেন্টকে বলেছি, যেন তাকে কোনও চার্জ ছাড়া ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রী বোডিং ইস্যুর নির্ধারিত সময়ের আগেই বিমানবন্দরে এসেছিলেন, লাউঞ্জে অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু তিনি বোডিং কার্ড সংগ্রহ করেননি। শেষ মুহূর্তে তিনি আর নির্ধারিত ফ্লাইটে যেতে পারেননি। যাত্রীর অভিযোগ ছিল, অন্যযাত্রীর জন্য তাকে অফলোড করা হয়েছে, কিন্তু আসলে তাকেই অফলোড করে অন্যযাত্রীকে নেওয়া হয়েছে কি না, এটি নিশ্চিত বলা যায় না। তিনি যথাযসময়ে বোডিং করলে এ সমস্যা হতো না।’ এ প্রসঙ্গে জানতে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের এজিএম (এয়ারপোর্ট সার্ভিস) কে এম জাফর উজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোনে কল করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
বার্তা বিভাগ প্রধান