Home » যেভাবে আটক করা হয় আকবরকে

যেভাবে আটক করা হয় আকবরকে

নিজস্ব প্রতিবেদন: আকবরকে আটকের পর গত রবিবার রাতে নিয়ে আসা হয় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডোনাবস্তিতে। পরে তাকে হস্তান্তর করা হয় ডোনাবস্তির ‘হেডম্যান’র (খাসিয়াদের বস্তি প্রধান) কাছে। পরে সেখান থেকে তাকে রহিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ভারতে পালানোর সময় আকবরকে গ্রেফতারের দাবি করলেও গ্রেফতারের আগের কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে অন্যচিত্র। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে কয়েকজন আদিবাসী খাসিয়া যুবক রশি দিয়ে তার হাত পা বাঁধছে। অপর একটি ভিডিওতে বেঁধে রাখা অবস্থায় আকবরকে খাসিয়া যুবকরা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ওই সময় খাসিয়া যুবকদের প্রশ্নের জবাবে আকবর বলছিল, ‘আল্লাহর দোহাই আমি মারি নাই। ছিনতাইর সময় ৫-৬ জন পিটিয়ে তাকে (রায়হান) মেরেছে। আমি তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’ ভারতে পালিয়ে আসা প্রসেঙ্গ ওই ভিডিওতে এসআই আকবর বলছিল, ‘আমাকে সাসপেনসন করা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছিল দুই মাস গেলে হ্যান্ডেল করা যাবে। তাই আমি পালিয়ে এসেছি। অন্য কোন কারণে পালিয়ে আসিনি।’

অপর আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে এক যুবক আকবরের হাত বাঁধতে চাইলে আকবর অনুনয়-বিনয় করছে। তখন ওই যুবক বলছে ‘তুই হ্যান্ডকাপ পরিয়ে অনেক লোককে ঘুরিয়েছিস। তোর হাত বেঁধে ছবি তুলে সিও স্যারকে পাঠাতে হবে।’

ভিডিওগুলোতে যেসব যুবকদের দেখা যাচ্ছিল তারা বাংলায় কথা বললেও তাদের কণ্ঠস্বর ছিলো অবাঙালিদের মতো। ওই ভিডিও দেখে কানাইঘাটের স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, ভিডিওর যুবকদের কথাবার্তা ও এলাকা দেখে বুঝা গেছে, তারা ভারতের খাসিয়া আদিবাসী হতে পারেন।

আকবরকে পালাতে কেউ সহযোগিতা করেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আকবর মাত্র গ্রেফতার হয়েছে। তাকে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইতে হস্তান্তর করা হবে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী পিবিআই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। আকবরকে পালাতে কোন পুলিশ কর্মকর্তা সহযোগিতা করে থাকলেও তদন্তে নিশ্চয় তা উঠে আসবে।’ আকবর গা ঢাকা দেওয়ার পর তাকে সহায়তাকারী হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহ আল নোমান নামের এক যুবকের নাম ওঠে আসে। আকবরের সাথে নোমানও দেশ থেকে পালিয়েছে এমন গুঞ্জনও ওঠেছিল। নোমান সম্পর্কে পুলিশের কাছে কোন তথ্য আছে কি-না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘ইতোমধ্যে নোমানের বাবা-মা ও স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এসআই আকবর গ্রেফতারের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। অপরাধী যতোই শক্তিশালী হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। আকবর জঘন্য অপরাধ করেছে, তাকে শাস্তি পেতে হবে।’

এদিকে, গ্রেফতার নিয়ে পুলিশের দেওয়া তথ্যের সাথে দ্বিমত পোষন করেছেন কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য সামছুল ইসলাম। তিনি জানান, ভারতীয় খাসিয়ারাই আকবরকে ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। রহিম উদ্দিন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। ভারতীয় খাসিয়াদের সাথে রহিমুদ্দীনের ব্যবসা রয়েছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *