সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ রায়হান আহমদ নিহতের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বহিস্কৃত উপ পরিদর্শক আকবর হোসেন ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রায়হানের মৃত্যুর একমাসের মাথায় সোমবার দুপুরে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) আব্দুল করিম।।
আকবর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পালিয়ে গেছেন বলে এরআগে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেলেও এএসপি আব্দুল করিম জানিয়েছেন, ভারতে পালানোর সময় সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সিলেটে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে নগরীর কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোরে ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, ফাঁড়িতে ধরে এনে রাতভর নির্যাতনের ফলে রায়হান মারা যান। ১১ অক্টোবর রাতেই রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন।
এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত্বাবধানে মহানগর পুলিশের তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর বর্তমানে পলাতক ছিলেন। তাকে পালানোতে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির আরেক এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তখন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দুইদিন পরই আকবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যান।
এদিকে গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর পিবিআই সিলেটের আখালিয়া নবাবি মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন কাজ শেষ করে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়।
পিবকিআই এঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দুই দফায় আটদিন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে তারা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হননি। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রতিনিধি