Home » ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানের অধ্যাদেশ জারি আজ

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানের অধ্যাদেশ জারি আজ

অনলাইন সংস্করণ: ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযোজন করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির জন্য এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার এটি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে জারি করার কথা।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, সংশোধিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবনও থাকছে। এটি মঙ্গলবার (আজ) অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যৌননিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ আর বিক্ষোভের মধ্যে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদন্ড করার প্রস্তাব অনুমোদন দিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সংশোধিত আইন অনুযায়ী ৯(১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে।

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ), ২০ (৭) উপধারা সংশোধন করতে হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ ছাড়া সাধারণ জখম হলে কম্পাউন্ড করা যাবে। আগের আইনে ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের রেফারেন্স ছিল। ২০০৩ সালে শিশু আইন প্রচলন করা হয়। এ বিষয়টি সংশোধন করা হচ্ছে। ধর্ষণের সংজ্ঞার পরিবর্তনের বিষয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোনো কথা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডেফিনেশনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ধর্ষণ মামলার বিচার কত দিনের মধ্যে শেষ হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনের ২০(৩) ধারায় এটা আছে ১৮০ দিনের মধ্যে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে।

এখানে বিচার পদ্ধতি মেনশন করা আছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শুধু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। অনেক দেশের আইন চেক করে দেখেছে আমাদের আইন মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর বর্তমান পরিস্থিতি ও বাস্তবতা সবকিছু মিলেই এটা হয়েছে। শুধু আন্দোলনের জন্য তো বিষয়টা আসেনি। সরকারের মধ্য থেকেও এর পক্ষে একটা প্রচার আসছে। মানুষের অ্যাওয়ারনেসের কারণে হয়তো এটা আসছে, সেটা হতে পারে।

আগে যাবজ্জীবন ছিল, সে শাস্তিও দেওয়া যায়নি, এখন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে লাভটা কোথায় হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যেভাবে প্রমোশন ক্যাম্পেইন হচ্ছে, এটাও তো একটা প্রমোশনের জায়গা। এটা অবশ্যই সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যারা ক্রাইম করে তারা অন্তত দুবার চিন্তা করবে যে, এটাতে তো মৃত্যুদন্ড আছে। এখন তো আর যাবজ্জীবন কারাদন্ড নয়।

১৮০ দিন তো দীর্ঘ সময়ও নয়। ডেফিনেটলি এটার পজিটিভ ইম্প্যাক্ট হবে। ‘এ আইনে বলা হয়েছে, আরোপিত অর্থদন্ডকে, প্রয়োজনবোধে, ট্রাইব্যুনাল অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করিতে পারিবে এবং অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণের অর্থ দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ হইতে আদায় করা সম্ভব না হইলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে আদায়যোগ্য হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সম্পদের ওপর অন্যান্য দাবি অপেক্ষা উক্ত অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাইবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা যাতে আরেকটু প্রমিনেন্টলি আসে ট্রায়ালে, সেটা চিন্তা করা হবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *