Home » প্রতারণা, কখনো এসপি-ওসি, কখনো ‘বিআরটিএ কর্মকর্তা

প্রতারণা, কখনো এসপি-ওসি, কখনো ‘বিআরটিএ কর্মকর্তা

সিলেটে প্রতারণার মাধ্যমে এক প্রবাসীর কাছ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন। বুধবার ভোরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কাজীবাড়ি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম কাজী অপু মিয়া। তিনি কাজীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ বলছে, অপু একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। চক্রটি পুলিশ সুপার (এসপি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা করে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের রাজনপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ মোরশেদ আহমদ (৩৩) সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকেন। গত ১৯ জানুয়ারি তিনি দেশে ফেরেন। এ সময় পরিচয় হয় একই উপজেলার কাজীবাড়ির বাসিন্দা কাজী অপু মিয়া ও তাঁর ভাই কাজী টিপুর সঙ্গে। তাঁরা কম দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখান মোরশেদকে। জুন মাসে তিনটি মাইক্রোবাস ১৯ লাখ টাকায় কিনে দেনও। কিন্তু গাড়িগুলোর হালনাগাদ কাগজপত্র ছিল না। হালনাগাদ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৩০ জুলাই মোরশেদ আহমদের কাছ থেকে চার লাখ টাকা নেন অপু ও টিপু। কিন্তু হালনাগাদ কাগজপত্র দিতে নানাভাবে টালবাহানা করতে থাকেন।

এরই মধ্যে ২৩ আগস্ট ফোন আসে মোরশেদের কাছে। অপর প্রান্ত থেকে এসপি পরিচয় দেওয়া হয়। বলা হয়, কিছুদিনের মধ্যে গাড়ির হালনাগাদ কাগজপত্র ও ডিজিটাল নম্বরপ্লেট দেওয়া হবে। ২৭ আগস্ট একটি কাগজ পান মোরশেদ। তাতে থাকা সিলমোহর ও স্বাক্ষরে লেখা ছিল, ‘বিআরটিএ সিলেটের কর্মকর্তা মোছা. দিলরুবা আক্তার’। এ ছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি ও এক উপপরিদর্শকের (এসআই) নামে স্বাক্ষরও ছিল। তবে কাগজগুলো পর্যালোচনা করে সন্দেহ হয় প্রবাসী মোরশেদ আহমদের। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করেন। তখন জানতে পারেন, থানায় ওই নামে কোনো এসআই নেই। থানার ওসির সইও জাল। ওই ঘটনার পর নানাভাবে যোগাযোগ করেও অপুর দেখা পাচ্ছিলেন না মোরশেদ।প্রব

৩১ আগস্ট হোয়াটসঅ্যাপে ফোন আসে মোরশেদের কাছে। সেখানে সিলেটের এসপির নিজের ছবি ও পরিবারের ছবি ভেসে ওঠে। অপর প্রান্ত থেকে একজন নিজেকে সিলেটের এসপি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ করা হয়ে গেছে। এ জন্য আরও টাকা দাবি করেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু মোরশেদ টাকা না দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিতে থাকেন। এভাবে তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার মামলা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। এতে কাজী অপু, তাঁর ভাই কাজী টিপুসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করেন। বুধবার ভোরে কাজী অপুকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও গণমাধ্যম) মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপুর কাছ থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিপুল পরিমাণ নথি জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, এসপি-ওসি ও বিআরটিএ কর্মকর্তা সেজে তিনি নিজেই ফোন দিয়েছেন। অপুর নামে আরও প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সেগুলোর ব্যাপারেও খোঁজখবর নিচ্ছি। অপুকে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *